ভেলকুনমামা ও মিথ্যান্বেষী pdf – সৌরভ মুখোপাধ্যায় Bhelkun Mama O Mithyaoneshi pdf – Sourav Mukhopadhyay

ভেলকুনমামা ও মিথ্যান্বেষী pdf - সৌরভ মুখোপাধ্যায় Bhelkun Mama O Mithyaoneshi pdf - Sourav Mukhopadhyay
ভেলকুনমামা ও মিথ্যান্বেষী pdf - সৌরভ মুখোপাধ্যায় Bhelkun Mama O Mithyaoneshi pdf - Sourav Mukhopadhyay

সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গের উপন্যাস Bhelkun Mama O Mithyaoneshi pdf ভেলকুনমামা ও মিথ্যান্বেষী pdf ডাউনলোড করুন ও Bhelkun Mama O Mithyaoneshi pdf ভেলকুনমামা ও মিথ্যান্বেষী pdf পড়ুন।

ভেলকুনমামা ও মিথ্যান্বেষী pdf - সৌরভ মুখোপাধ্যায় Bhelkun Mama O Mithyaoneshi pdf - Sourav Mukhopadhyay
ভেলকুনমামা ও মিথ্যান্বেষী pdf – সৌরভ মুখোপাধ্যায় Bhelkun Mama O Mithyaoneshi pdf – Sourav Mukhopadhyay

Bhelkun Mama O Mithyaoneshi pdf ভেলকুনমামা ও মিথ্যান্বেষী pdf নমুনাঃ

টিকিটের দাম দেড়গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রাতারাতি, তবু হাউজফুল। একদম গোড়াতেই অ্যাডভান্স বুকিং না করলে ভেলকুনমামার চাহিদামতো ফার্স্ট-রো’তে সিট পাওয়া যেত না কিছুতেই।

ডেলকুনমামাকে কিন্তু অস্থির দেখাচ্ছে বেশ। শো শুরু হয়ে গিয়েছে, জাদুকর ইউ মল্লিক তাঁর সহকারী তিনকড়িকে নিয়ে নানা রকম খেলা দেখাচ্ছেন, কিন্তু মামা যেন কেমন অন্যমনস্ক। কাঁধের ঝোলাব্যাগটা কোলের উপর শুইয়ে রাখা আছে, ক্রমাগত তা থেকে সুতুলি খুঁটে চলেছেন। আর বাঁহাতের ঢাউস হাতঘড়িটায় সতর্ক হাত বোলাচ্ছেন মাঝে-মাঝে।

ছায়ামানব pdf – শরীফুল হাসান Chayamanob pdf – Shariful Hasan

আজ মামার পরনে একটা খদ্দরের পাঞ্জাবি আর ছিল পায়জামা, তার সঙ্গে ওই বিটকেলদর্শন রিস্টওয়াচটা একদমই যায় না। কিন্তু ওটাই নাকি আজকে মামার তুরুপের তাস। ঘড়ি নয়, ওটা হচ্ছে মামার আবিষ্কৃত স্থূল স্প্যান সিগনাল জ্যামার, ‘ডেরি মাইনর ইনভেনশন’ মামার ভাষায়। বিভিন্ন সরকারি জায়গায় গোপনীয়তার স্বার্থে যে ধরনের জ্যামার ব্যবহার করা হয়, ওটি নাকি তার ক্ষুদ্র সংস্করণ। ওর পাল্লা মোটে তেরো ফুট, কিন্তু কার্যকারিতায় মোক্ষম। ওই তেরো ফুটের মধ্যে সমস্ত ধরনের ওয়্যারলেস ট্রান্সমিশন কিংবা সিগন্যাল আদান-প্রদান অকেজো করে রাখতে পারে কয়েক মিনিট। প্রথমটায় আমরা বিশ্বাস করিনি।

তাই শো দেখতে আসার আগে বৈঠকখানায় বসে আমাদের সামনে ডেমোও দিয়েছেন ভেলকুনমামা। ওর সুইচটা অন করার পর আমাদের তিনজনের মোবাইলই কিন্তু কাজ করছিল না। এমনকী, রেডিও সেটেও শুধু কড়কড় আওয়াজ হচ্ছিল, কোনও স্টেশনই ধরা যাচ্ছিল না ওই কয়েক মিনিট। সুইচ বন্ধ করতে ফের সব নরমাল!

পল্টু সব দেখেশুনে হাঁকপাঁক করে উঠেছিল, “আরিব্বাস! তার মানে ফার্স্ট রো-তে বসে এটা অন করে দিলে স্টেজ অবধি এফেক্ট চলে যাবে অ্যান্ড দ্য খেল ইজ খতম!”

ভেলকুনমামা শান্ত ভাবেই বলেছিলেন, “না, এখন থেকেই অত লাফালাফির কিছু নেই। প্রথম কথা আমরা এখনও জানি না, সত্যিই কোনও যান্ত্রিক সিগন্যাল ওখানে আদান-প্রদান হবে কিনা! আমরা শুধু একটা সম্ভাব্য উপায় ভেবে নিয়ে তার প্রিকোশান নিচ্ছি। দ্বিতীয়ত, এই মিনি জ্যামারের ব্যাটারির ক্ষমতা কিন্তু খুব সীমিত। হয়তো মাত্র কয়েক মিনিটই পুরোপুরি কার্যকারিতা বজায় রাখতে পারবে। ফলে পরিস্থিতি অনুযায়ী তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা করাটাই দরকার। নাম্বার থ্রি, দর্শকদের বোকা বানানোর জন্যে জাদুকরের আরও নানা ধরনের হাত-সাফাই, কারচুপি, প্রিপ্ল্যানড কলাকৌশল থাকে। সেগুলোর দিকেও আমরা সতর্ক নজর রাখব। আই মিন, আমরা চারজনেই!”

এর পর আরও কিছু গেমপ্ল্যান ঠিক করে দিয়েছিলেন ভেলকুনমামা। টিকলু সব শেষে বলেছিল, “আচ্ছা মামা, শেষ পর্যন্ত যদি দেখা যায় আমাদের সব রকম অগ্রিম ব্যবস্থা সত্ত্বেও ঋতন্তরের শো-টা বেমালুম সাকসেসফুল হয়ে গেল, তা হলে তো মেনে নিতেই হবে যে, অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা বলে সত্যিই কিছু একটা আছে!”

মামা গম্ভীর হয়ে গিয়েছিলেন। কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থেকে বলেছিলেন, “না হে, তখনও সেন্ট পার্সেন্ট নিশ্চিত হওয়া যাবে না। এইটুকুই বলা যেতে পারে যে, আমরা রহস্যটা উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছি, ব্যস। হয়তো আরও চতুর, আরও বিজ্ঞ, আরও সতর্ক কোনও চোখ আসল ব্যাপারটা ধরতে পারত!”

“আপনি না পারলে আর কে পারবে বলুন?” আমি একটু খোশামোদের ভঙ্গিতে বলেছিলাম।

মামা কিন্তু মাছি ওড়ানোর মতো কথাটাকে উড়িয়ে দিয়ে বলে উঠেছিলেন, “উঁহু, উঁহু ওইটি অতি বাজে একটি কনসেপ্ট। ওই অহংয়ের ফাঁদে পড়ে বড়-বড় বিদ্বান, বুদ্ধিমান লোকও নানা অন্ধ বিশ্বাস আর ভ্রান্ত ধারণায় আটকে যায়। নিজে যেটার ব্যাখ্যা বের করতে পারে না, সেটাকে অলৌকিক বলে মেনে নেয় ফস করে। সে নিজে যে বোকা বনতে পারে, তার চেয়েও বিচক্ষণ কেউ যে আসল সত্য খুঁজে বের করতে পারে, একথা স্বীকার করতে ইগোয় লাগে তার। তার ফলেই দেখবে বড়-বড় বিজ্ঞানী, অধ্যাপক, ডাক্তার, বুদ্ধিজীবী অনেকেই জোর গলায় অনেক রকম অপবিজ্ঞান, কুসংস্কার, আজগুবি তত্ত্বের হয়ে সওয়াল করে থাকেন। আমি কখনও ওই ফল্স ইগোর ব্যারামে ভুগিনি।”

মঞ্চের উপর বেশ দাপটেই চষে বেড়াচ্ছেন ইউ মল্লিক। পরনে ঝলমলে পোশাক, তা থেকে আলো ঠিকরে পড়ছে। বেশ বুদ্ধিদীপ্ত চোখ- মুখ। ছিপছিপে লম্বা মেদহীন শরীর থেকে আত্মবিশ্বাসও ঝরে পড়ছে খুব। সঙ্গের তিনকড়ি লোকটি একটু নাদুসনুদুস, হাটাচলা একটু শ্লথ। এর পরনে সাদা পোশাক, জাদুকরের সঙ্গে কনট্রাস্ট করতে চাওয়া হয়েছে বোধ হয়। জাদুকর একে নানা ভাবে বোকা বানাচ্ছেন। দু’জনের প্লে-অ্যাকটিং মিলেমিশে খেলাগুলো জমছে ভাল। একটা বিশেষ ম্যানারিজম আছে ইউ মল্লিকের, খুব নিচু গলায় সুরেলা ছন্দে নানা রকম সংলাপ বলে চলেছেন অনর্গল। আর তিনকড়ি কেবলই যেন চেষ্টা করছে তাঁর জাদুর গোপন রহস্যটা ধরে ফেলার।

জাদুকর একটা স্বরগোশকে টুপি চাপা দিয়ে ভ্যানিশ করে দিলেন, দর্শক হাততালি দিয়ে উঠতেই খ্যানখেনে গলায় তিনকড়ি চেঁচিয়ে উঠেছে, “আমি বুঝতে পেরেছি।” দৌড়ে গিয়ে জাদুকরের জোব্বার মধ্যে হাত ঢুকিয়ে খরগোশ খুঁজতে শুরু করেছে, কিন্তু খরগোশটা সেখানে নেই। তার বদলে একটা পাতি স প্যাকপ্যাক করতে করতে তাকে তাড়া করেছে আচমকা। পালাতে গিয়ে হোঁচট খায় তিনকড়ি, গিয়ে পড়ে একটা প্যাকিং বাক্সের উপর, সেটা ভেঙে গিয়ে বেরিয়ে পড়ে হারিয়ে যাওয়া খরগোশ!

পল্টু হাসতে হাসতে বলল, “অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকটা একটা গবেট, কী বল: “

চিক মাথা নাড়ল, “একদমই নয় যে তাঁড়ের ভূমিকায় এত নিপুণ অ্যাক্টিং করতে পারে, সে অতি বুদ্ধিমান লোক।”

আমিও তাই ভাবছিলাম। ভাদুকর ও সহকারী দু’জনেরই টাইমিং এবং বোঝাপড়া একদম নিখুঁত এবং সার্কাসের জোকাররা যেমন হয়, এই তিনকড়ি লোকটিও সম্ভবত জাদুর কায়দাকামুনে দক্ষ। শুধু লোক হাসানোর অভিনয় করছে।

একের পর এক জমকালো সব জাদু দেখিয়ে চলেছেন জাদুকর। হাততালিও পড়ছে খুব। কিন্তু ভেলকুনমামা উসখুস করছেন। ফিসফিস করে আমাকে বললেন, “ধূস, এসব ছেলেভোলানো ম্যাজিক তো আমিও দেখাতে পারি। চাদনি আর টেরিটিবাজারে হাজারখানেক টাকার মেটিরিয়াল কিনে নিলেই এ সমস্ত ভেলকি দেখানো যায়। একই ম্যাজিক, শুধু যোগ বদলে বদলে দেখিয়ে চলেছে সব্বাই, গত পঞ্চাশ বছর ধরে।” “কিন্তু ওই যে মঞ্চের উপর হঠাৎ করে একটা শিম্পাঞ্জি চলে এল, একটা সাইকেল উধাও হয়ে গেল বেমালুম, এগুলো তো আর কেনা জিনিস নয়, মামা। “

“আরে ধ্যাৎ, ও তো ব্ল্যাক আর্ট আর ব্যাকগ্রাউন্ড কার্টেনের খেলা। আলোরও নানারকম কায়দা থাকে। ও জিনিসও বহু পুরনো হে। আমি ভাবছি আসল আইটেমটা কখন আসবে। অধৈর্য হয়ে পড়ছি, বুঝলে?”

 “সবচেয়ে বড় আকর্ষণ সবার শেষে আসে, জানেনই তো।”

এইভাবে পৌনে দু’ঘন্টা কেটে যাওয়ার পর, মঞ্চের সব আলো নিভে গেল। মিউজিকটাও পালটে গেল সঙ্গে সঙ্গে। এতক্ষণ ঝংঝং জগঝম্পের মতো বাজনা বেজে চলেছিল, এবার মৃদু কিন্তু তীক্ষ্ণ এসরাজের ছড় টানার আওয়াজ, সাসপেন্স মুভির ব্যাকগ্রাউন্ড টিউন যেমন হয়, অনেকটা সেই রকম। গা-শিরশিরে সেই আবহসঙ্গীতের সঙ্গে মানানসই একটা গাঢ় গম্ভীর গলা গমগম করে উঠল হঠাৎ, “এবার সেই মুহূর্ত যার জন্যে এত দম-চাপা অপেক্ষা! সকলকে বিস্ময়ে হতবাক করে দেওয়ার মতো সেই ঘটনার প্রদর্শন হতে চলেছে এবার। আসুন, মঞ্চে স্বাগত জানাই সেই অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন বালককে…”

ভেলকুনমামা একটু ঝুঁকে এলেন আমাদের দিকে। চাপা গলায় বললেন, “ভয়েসটা কার, গেস করো তো দেখি।”

পল্টু সঙ্গে সঙ্গে বলল, “জাদুকরের?”

টিকলু বলে উঠল, “আমার তো মনে হচ্ছে, ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট তিনকড়ির। এতক্ষণ ইচ্ছে করে চেরা গলা বের করেছিল, এটা ওর আসল ভয়েস। গ্রোয়িংগুলো অল্প-অল্প মিলেছে।”

সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গের উপন্যাস Bhelkun Mama O Mithyaoneshi pdf ভেলকুনমামা ও মিথ্যান্বেষী pdf ডাউনলোড করুন এখান থেকে ও Bhelkun Mama O Mithyaoneshi pdf ভেলকুনমামা ও মিথ্যান্বেষী pdf এখান থেকে পড়ুন।

Be the first to comment

Leave a Reply