দেবমাল্য কর্মকারেএর হরর, থ্রিলার Preet Bari pdf প্রেতবাড়ি pdf ডাউনলোড করুন ও Preet Bari pdf প্রেতবাড়ি pdf পড়ুন।
Preet Bari pdf প্রেতবাড়ি pdf নমুনাঃ
দিন সাতেক হলো ঋতুজা আর কৌশানি হাতিবাগানের একটা বাড়িতে পেইং গেস্ট হিসেবে থাকছে। আসলে ব্যাপারটা খুব হঠাৎ করেই হয়েছে কারণ এতদিন অনলাইন ক্লাস চলার সুবাদে কলকাতায় খুব একটা যাতায়াত করতে হয়নি ওদের কিন্তু এবার অফ্লাইন ক্লাস শুরু হয়ে যাওয়ায় হঠাৎই বাড়ি ছেড়ে ওদের দুজনকে এখানে শিফট হতে হয় এখানে। না হলে রোজ রোজ কলকাতা থেকে নিজেদের বাড়ি যাতায়াত করা ওদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। ঋতুজা পড়াশোনা করছে কলকাতা ইউনিভার্সিটি তে মাস কমিউনিকেশন মাস্টার্স আর কৌশানি কলকাতায় থেকে এমবিএ’র প্রস্তুতি নিচ্ছে, খুব সম্ভবত সামনে ওদের পরীক্ষা।
তবে যাই হোক বাড়ির বাইরে থাকার অভিজ্ঞতা ওদের খুব একটা নতুন নয় কারণ এর আগে যখন গ্র্যাজুয়েশনের সময় প্রথম প্রথম অফলাইন ক্লাস হচ্ছিল তখনও ওরা কলকাতাতেই থাকতো অন্য এক বাড়িতে সুতরাং এখনো ওদের মানিয়ে নিতে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না। যেই বাড়িটায় ওরা থাকে সেটা তিন তলা, আকারে বেশ ভালই বড়োসড়ো, বাইরের দেওয়ালের জরাজীর্ণ অবস্থা দেখলে একনজরেই বোঝা যাবে যে এ সম্পত্তি বহু পুরনো, হলদে রঙের প্রলেপে ভেদ করে বাড়ির বহু অংশ থেকে কালছে ইট গুলো সরাসরি বেরিয়ে এসেছে এবং সেই ইটের গা বেয়ে জন্ম নিয়েছে সবুজ শ্যাওলা। তবে যত পুরনোই হোক না কেন উত্তর কলকাতার এই বাড়ি গুলোর মধ্যে আলাদা একটা ব্যাপার রয়েছে, চারিপাশের আদিম কারুকার্য দেখলে মনটা যেন অজান্তেই ভরে ওঠে।
ঋতুজা আর কৌশানীর ক্ষেত্রেও তার বিপরীত কিছু হয়নি, ওদের মাঝে মাঝেই মনে হত কত অজানা ইতিহাস কত বিপ্লবের সাক্ষী হয়ে এখনো সোজা ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই বাড়িটা, ওদের খুব জানতে ইচ্ছে করত যে একসময় কারা থাকতো এই বাড়িতে, তাদের জীবনযাত্রা কেমন ছিল অথবা একদম নিচ তলায় বড় বড় খাম্বার নিচে যে বিশাল ঠাকুরদালান রয়েছে সেখানে এক সময় কিভাবে পূজা করা হতো অথবা কত লোক সেই পুজো দেখতে আসত এই সমস্ত নানান বিষয় ওদের মনের মধ্যে সারাক্ষণ ঘুরপাক খেতে থাকে। ওহো! কথাপ্রসঙ্গে বলাই হয়নি বাড়ির একতলাটা মোটামুটি ফাকাই থাকে শুধু মালতি অর্থাৎ বাড়ির কাজের মেয়েটা মাঝে মাঝে কাজের ফাঁকে কোনার দিকের ঘরটায় বসে একটু আরাম করে নিত এছাড়াও বাড়ির নিচেই হত।
একি? ফাল্গুনী এখানে? মধুবালা দেবীর কথামতো তার তো এখন ঘুমানোর কথা…তাহেল কি প্রসাদের মিষ্টিটা সে পুরোপুরি খাইনি? আর সেই জন্য মাঝপথেই ঘুম ভেঙে গিয়েছে তার? দরজার সামনে একটা লোহার রড নিয়ে একপ্রকার হাঁফাতে হাঁফাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে ফাল্গুনী সমাদ্দার। ঘরের ভিতরের দৃশ্য দেখে এ পৃথিবীর প্রতি সমস্ত বিশ্বাস তার নিমেষের মধ্যে ভেঙে গিয়েছে। যজ্ঞ বেদীর সামনে ওখানে বসে রয়েছে তার শাশুড়ি · শাশুড়ির বড় ছেলে এবং বৌমা আর মাঝখানে একটা গোলাকার বৃত্তের উপর বসিয়ে রাখা হয়েছে তার ফুটফুটে বাচ্চা মেয়েটাকে। তারমানে এরা সবাই এর সঙ্গে যুক্ত? প্রচন্ড রাগে, ঘেন্নায় আর এক মুহূর্তের জন্যও অপেক্ষা করলেন না তিনি সরাসরি বড় ভাসুর এবং ননদের মাথায় আঘাত করলেন।
আর তারপর যখন শাশুড়িকে আঘাত করতে যাবেন ঠিক সেইসময় মধুবালা দেবী পাশে রাখা ছুরিটা হাতে নিয়ে সরাসরি ঢুকিয়ে দেয় সেই বাচ্চা মেয়েটাক পেটের মধ্যে আর তার পরের মুহূর্তেই ফাল্গুনী দেবী নিজের হাতের রড টা সরাসরি বুকের এপার ওপার করে দেয় নিজের শ্বাশুড়ীর। এ সমস্ত ঘটনার পর প্রচন্ড ভেঙে পড়েন তিনি, পরের দিন সকালে যখন আশুতোষ সমাদ্দার বাড়ি ফেরেন তখন বাড়ির এই অবস্থা দেখে অঝোরে কাঁদতে আরম্ভ করেছিলেন লোকটা। সবকিছু তার চোখের সামনে এইভাবে শেষ হয়ে পড়ে থাকবে তা তিনি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি।
সেদিনের পর থেকে তার বউ আর কখনো স্বাভাবিক অবস্থায় আসেনি, সারাদিন তিনি মেয়ের শোকে পাগলের মত করতেন। দিন দিন তার অবস্থা আরো খারাপ থেকে খারাপের দিকে যেতে লাগলো। বহু ডাক্তার দেখানো হয়েছিল ফাল্গুনী দেবীকে কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছুই হয়নি। পরে একসময় তাকে তারাপীঠে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানকার এক বিখ্যাত সাধক ফাল্গুনী।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.