শতরঞ্চি – দেবমাল্য চক্রবর্তী Sataranji by Debmalya Chakraborty

শতরঞ্চি - দেবমাল্য চক্রবর্তী Sataranji by Debmalya Chakraborty
শতরঞ্চি - দেবমাল্য চক্রবর্তী Sataranji by Debmalya Chakraborty

দেবমাল্য চক্রবর্তীর শতরঞ্চি Sataranji গল্পটি পড়ুন এখন থেকে। শতরঞ্চি Sataranji গল্পটি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।

শতরঞ্চি - দেবমাল্য চক্রবর্তী Sataranji by Debmalya Chakraborty
শতরঞ্চি – দেবমাল্য চক্রবর্তী Sataranji by Debmalya Chakraborty

শতরঞ্চি Sataranji গল্প

শতরঞ্চিটা গুটিয়ে ফেলেন নবারুণ। না ফেললে সেটা ওভাবেই পড়ে থাকত। আরও অন্তত চারটে পরত পড়ত ধুলোর। পড়ত! কী আর করা যেত! কিনুত সেটা হল না। আর পাঁচটা সাহিত্যসভার শেষে যেমনটা হয়, এবারেও তেমনই হল। প্রথমে ধুলো ঝেড়ে, ঠিক যেমন করে রোলের দোকানে রোল গোটানো হয়, তেমন করে পুরো শতরঞ্চিটাই রোল করে ফেললেন নবারুণ।

বর্মার অন্ধকারে pdf – শিশির বিশ্বাস Burmar Ondhokare pdf – Sisir Biswas

ভদ্রলোক সরকারি চাকুরে। চাকরিটা নেহাত করতে হয় তাই করেন। বাকিটা সময় কাগজের স্তূপেই পড়ে থাকেন। কালি-কলম-দোয়াত নেহাত উঠে গিয়েছে তাই, নাহলে হয়তো কালিঝুলি মেখে তাতেই ডুবে থাকতেন। বিয়ে করেছেন কবে। আড়ালে-আবডালে শতররা যদিও বলেন, “হৃঃ, বিয়েটা নবারুণবাবু করেননি। বৌদি দয়া করে ওঁকে বিয়ে করেছেন। নাহলে অমন বাউনডলেকে কেউ বিয়ে করত নাকি!” এসব কথা নবারুণের কানে যে যায় না, তা নয়। কিনুত কোনও এক অজানা কারণে এই নিন্দেমন্দটা উড়িয়ে দেন যেন ফুৎকারে। কনফিডেন্সটা ঠিক কোথায় কে জানে নবারুণের? ভাবখানা এমন যেন, ওঁর স্ত্রী সরমা-ই ওঁকে বিয়ে করে বর্তে গিয়েছেন।

ঘনিষ্ঠমহলে সরমা সম্পর্কে বেজায় প্রশংসা করেও, নবারুণ বলে থাকেন, “কী জানেন তো, ও রকম গেছো মেয়েদের জন্য আমার মতো শিবতুল্য বরই ঠিক আছে! যা মুখের সামনে নামিয়ে দেয়, খেয়ে নিই। যা পরতে দেয়, পরে নিই। কিনুত একটা কথা বলতেই হচ্ছে, সরমা না থাকলে আমার এই সাহিত্যচর্চা করেই উঠে যেত!”

সাহিত্যসভা যে ভদ্রলোক একা করেন, তা নয়। একটা গোটা হলঘর ভাড়া করে ফেলেছেন কয়েকজন মিলে। প্রতি মাসে ভাড়া দিয়ে সেখানে সভা হয়। সেখানে নানা বিষয়ে আলোচনা হয় প্রত্যহ। মফস সলের সেই সভায় হাজির হন স্থানীয় কলেজের বাংলা-ইংরেজি-ইতিহাসের অধ্যাপক থেকে শুরু করে কোনও প্রত্যন্ত গ্রামের কবিও। রম্যরচনাকার কিংবা প্রাবন্ধিকরাও সেখানে আসেন। সকলেই উঠতি। কেউই জানেন না, তাঁদের কী হবে! মানে তাঁরা রবীন্দ্রনাথ হবেন, নাকি জীবনানন্দ! নাকি বুদ্ধদেব বসুর মতো ফরাসি অনুবাদটাই মন দিয়ে করবেন। প্রত্যেকেই নিশ্চিত, কিছু একটা হবেন। তার মাঝে একটাই লোক শুধু জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠটুকু করেন৷ হ্যাঁ, ওই ‘শিবতুল্য’ নবারূণই।

তা ধরুন, কোনও সভা থাকলে সকাল থেকে কোনও লোককে দিয়ে, নয়তো কাউকে না পেয়ে নিজেই হলঘর সাফসুতরো করা দিয়ে শুরু। তারপর ওই ঘরে শতরঞ্চি পাতা, মিষ্টির দোকানে অর্ডার দেওয়া, দরদাম করে ঠিক দশ টাকার মধ্যে ম্যাঙ্গো রসগোল্লা-কালাকাঁদ-শিঙাড়ার প্যাকেট বানিয়ে নেওয়া থেকে শুরু করে প্রত্যেক অতিথিকে ফোন করে বলে বলা, ‘দাদা, আসছেন তো?’, সবটাই নবারুণ করে থাকেন।

এ ধরনের লোকজনের ক্ষেত্রে যে সমস্যাটা হয় আর কী, সবাই ভেবে নেন, “উনি আছেন তো, হয়ে যাবে। আর একটা সমস্যাও হয়, লোকজন এটাও ভেবে বসেন, উনি, টেকেন ফর গ্রান্টেড’। যে কারণে কেউ কোনওদিন সাহিত্যসভার শেষে প্যাকেটগুলো ঝোলায় পুরে চলে যাওয়া ছাড়া নবারুণকে একটুও সাহায্য করেন না। নবারুণবাবুর যে ব্যাপারটা ভাল লাগে, তা নয়৷ কিনুত হয়তো ‘শিবতুল্য’ বলেই কিছু বলতে পারেন না। আর বাকিরা সেই সুযোগটা নেন।

“ভূতের বেগার কেন খাটতে যাও? কী হবে ওই সব সাহিত্য করে? করো, তাতে কোনও আপত্তি নেই। কিনুত সংসারটাও তো দেখতে হবে নাকি? যেদিন খুশি, যখন খুশি বিনা নোটিসে ওই লোকগুলোর সঙ্গে চলে যাচ্ছে সভা করতে। আমিও পারব না খেতে দিতে। নিজের খাবারটাও নিজে বানিয়ে নাও এবার থেকে, ,” কথাগুলো শুনতে হয় নবারুণবাবুকে। ওঁর স্ত্রী সরমার কাছ থেকে। যে ভদ্রমহিলা ছেলেমেয়ে মানুষ করবেন বলে আর চাকরিবাকরি করেননি। কারণ তিনি জানতেন, তাঁর যা বর, তাতে ছেলেমেয়ে মানুষ করা হয়েছিল আর কী! নবারুণ সেটা জানেন। বোঝেন। মুখ ফুটে কৃতজ্ঞতা হয়তো দেখান না। এমন কোনও কাজও করেন না, যাতে সরমার মনে হয় যে সত্যিই লোকটা তাঁকে ভালবাসেন।

কিন্তুত কী যেন একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং আছে ওঁদের মধ্যে। মুখ ফুটে কোনও সিনেমা দেখাতে নিয়ে যাওয়ার কথা কিংবা কোনও রেস্তরাঁয় নিয়ে গিয়ে খাওয়ানোর কথাও নবারুণ বলেননি সরমাকে কোনওদিন। তবু তিনি সরমার প্রশ্রয় উপভোগ করেছেন বছরের পর বছর। যে প্রশ্রয় তাঁকে কনফিডেন্স দিয়েছে সাহিত্য করার। কবিতা লেখার। ওই হলঘরটায় গিয়ে ভূতের বেগার খাটার।

এভাবেই অনেকটা বছর কেটে যাওয়ার পর একদিন ওই ভাড়ার হলঘর থেকে সাহিত্য সংসদ তৈরি হল। সেদিন নবারুণের আনন্দ হল সবচেয়ে বেশি। যেন নিজের বাড়ি হয়েছে। বাংলার অধ্যাপক রঞ্জন চৌধুরী হলেন সাহিত্য সংসদের সভাপতি। নবারুণ হলেন সহ-সভাপতি। নবারুণের বনুধরা আড়ালে বলতে শুরু করলেন, “নবারুণ যেহেতু কেরানি, তাই ওকে সভাপতি করল না। আবার না করলে যে গালাগালি শুনতে হবে, সেটা আঁচ করতে পেরে সহ-সভাপতি করেছে দ্যাখ। যত্তসব। ও না থাকলে হত তোদের এই সাহিত্য করা? খাস তো সব বৌয়ের মুখঝামটা। আর দেখিস বাংলা সিরিয়াল। নবারুণের মতো একটা কবিতা লিখে দেখা দেখি?”

বিষয়টা কানে গিয়েছিল রঞ্জনবাবু এবং তাঁর কিছু তাঁবেদারের। তখন তাঁরা কিছু বলেননি বটে, কিনুত কোথাও যেন একটা ষড়যন্ত্রের আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল। যেটা ‘শিবতুল্য’ নবারুণ আন্দাজও করতে পারেননি।

“শোনো নবারুণ, আজ থেকে তোমার আরও একটা দায়িত্ব বাড়ল। তোমাকে কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বটাও নিতে হবে। হিসাবটা তোমার চেয়ে ভাল বোধহয় কেউ রাখতে পারবে না,” কথাগুলো সবার সামনেই বললেন রঞ্জনবাবু। নবারুণের কাছে তো এটাও বিরাট পাওনা কিনা! যে নবারুণ সভায় গান হবে বলে নিজের গাঁটের কড়ি খরচ করে মেয়ের হারমোনিয়াম আনান রিকশায় করে, যে লোকটা নিজের টাকা খরচ করে দিনের পর দিন সাহিত্য সংসদের প্রত্যেকটা সভায় বাড়তি মিষ্টির প্যাকেটের টাকাটা দিয়ে দেন, তার কাছে তো এটা বিরাট ব্যাপারই বটে! কিনুত নবারুণের বনুধরা কোথাও একটা গন্ডগোল দেখছিলেন এসবের মধ্যে। কোথাও যেন কিছু একটা ঠিক হচ্ছে না!

“ছিঃ ছিঃ নবারুণ, এতগুলো টাকার কোনও হিসাব নেই? তোমাকে কি এই জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলাম এত বড়? সাহিত্য সংসদের সদস্যদের ঘাম-রক্ত- জলের টাকা এভাবে নয়ছয় করতে পারলে তুমি? ভেবেছিলাম, তোমাকে পুলিশে দেব। কিনুত সদস্যরা অনুরোধ করলেন বলে স্টেপটা নিতে পারলাম না,” পরের মাসেই ভর্তি সভাঘরে এ কথা শুনলেন নবারুণ। এভাবেই ওঁকে অপমান করলেন রঞ্জনবাবু। সেদিন কেউ কিছু বলল না। একদল কেমন যেন বোবা মেরে গেল, আরেকদল মুখ টিপে হাসল শুধু। যে লোকটা নিজের রক্ত জল করে সাহিত্যের এই মন্দিরটি তৈরি করল, তার জন্য কেউ টু শব্দটি করল না। সত্যি হল নবারুণের বধদের আশঙ্কা। এই ছিল তবে রঞ্জনবাবুর মনে?

সেদিন চুপচাপ বাড়ি ফিরে যান নবারুণ। রাতে কোনও রকমে একটা রুটি আর এক বাটি দুধ খেয়ে শুয়ে পড়েন তিনি। পরের দিন সকাল থেকেই ধুম জ্বর। ডাক্তারখানায় নিয়ে যাওয়ার পর জানা গেল, হাইপ্রেশার। আরও কয়েকটা টেস্ট করার পর জানা গেল, সুগারটাও ধরেছে। এদিকে সরমা বুঝতে পারছেন না, কী করবেন। সামনে ছেলেমেয়ের পরীক্ষা। অথচ শক্ত সামর্থ লোকটা শুয়ে আছে। কেমন যেন ফাঁকা হয়ে গিয়েছে নবারুণের চাউনিটা। কিছুই তো বলছে না, কী হয়েছে? কী এমন হল, যে লোকটা এ রকম হয়ে গেল? ভেবে পান না সরমা।

“আসগর, প্লিজ সরমাকে কিছু বলিস না। তোর পায়ে পড়ি,” নবারুণের বনুধ আসগর আলির সঙ্গে কথোপকথনের শেষটা শুনে ফেলেন সরমা। তার মানে কিছু একটা সত্যিই হয়েছে। কথা না বাড়িয়ে আসগরকে ফোন করেন সরমা। “আসগরদা, কী লুকোচ্ছেন আপনি আর আপনার বন্ধুধ?”, বেশ কড়া গলাতেই কথাগুলো বলেন সরমা। শেষমেশ সরমাকে পুরোটা বলতে হয় আসগরকে। সেদিন কেমন যেন দক্ষযজ্ঞের সময়ের সতীর মতো হয়ে ওঠেন সরমা। ফোনটা রেখেই প্রায় দৌড়ে সরমা নবারুণের ঘরের দিকে। “অ্যায় শোনো, যত টাকার হিসেব মিলছে না, সেটা আমি দিয়ে দিচ্ছি গয়না বেচে।

তুমি আজই দিয়ে আসবে,” নবারুণের সামনে দাঁড়িয়ে প্রায় গর্জন করে ওঠেন এক গৃহবধু তাঁর ‘শিবতুল্য’ স্বামীকে এভাবে অপদস্থ করার সাহস কে পায়? আসগর আলি সেদিন সরমাকে না আটকালে রঞ্জনবাবুর মুখের উপর টাকাটা ছুড়ে দিয়ে আসাটা এক প্রকার স্থির করে ফেলেছিলেন সরমা। পুরনো বন্ধ তো, বুঝতে পেরেছিলেন নবা ঠিক ধ্যাড়াবে! আর বৌদিকেও আসগর ভালই চিনে গিয়েছেন এত দিনে। সরমাও যে চটে গেলে দক্ষযজ্ঞ বাধাতে দু’বার ভাববেন না, তা তিনি জানতেন। তাই আধঘণ্টার মধ্যেই সেদিন নবারুণের বাড়িতে চলে আসেন আসগর। ভাগ্যিস!

অসুস্থ অবস্থাতেই টাকাটা দিয়ে আসেন নবারুণ। স্ত্রীয়ের গয়না বেচেই। কারণ মাইনে বা সঞ্চয় তাঁর ততটাও ছিল না, যা দিয়ে অপমানের দাগ সাফ করা যায়। রঞ্জনবাবু সেদিন খুব অপ্রসুততে পড়েছিলেন নিশ্চয়ই। না হলে কেনই বা বলবেন, “না নবারুণ, আমি কিনুত ওভাবে তোমাকে বলতে চাইনি। ওরা এমন ভাবে মাথাটা গুলিয়ে দিয়েছিল সেদিন, এমন ভাবে তোমার বিরুদ্ধে খেপিয়ে দিয়েছিল, আমি কেমন যেন হয়ে গেলাম জানো। পারলে আমাকে….”। অসম্পূর্ণ বাক্যের শেষটা মাফ কোরো’ ছিল, এটা অনুমান করা যায়। কিনুত নবারুণ সেদিন কিছু বলেননি। শুধু মুচকি হেসে চলে আসেন।

মাস ছ’য়েক অসুস্থ থাকার পর সুস্থ ওঠেন নবারুণ। তারপর আর সাহিত্য সংসদমুখো হননি। অভিমানে তো বটেই, কিছুটা সরমার ভয়েই। রঞ্জনবাবুও একদিন আসেন নবারুণের বাড়ি। কিনুত সরমা তাঁর আশপাশে না গেলেও চা- বিস্কুট নিয়ে রঞ্জনবাবুর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন, “কেমন চলছে সাহিত্য সংসদ, রঞ্জনদা?” লজ্জায় সেদিন চা-টা কোনও রকমে শেষ করে নবারুণের হাতটা ধরে রঞ্জনবাবু বলেন, “তোমাকে ছাড়া চলছে না নবারুণ, প্লিজ তুমি চলো।”

ও বাড়িতে এর পরও অনেকদিন কোনও কথা হয়নি এ নিয়ে। সরমা, নবারুণ যে যার নিজের মতো জীবনটা গুছিয়ে নেয়। ওদের ছেলে শুভ্র, কলকাতায় আসে পড়াশোনা করতে। বাবার সঙ্গে সাহিত্য-রাজনীতি-প্রেম সবকিছু নিয়েই আলোচনা হয় শুভ্রর। কিনুত বাবার যে কোথাও একটা অস্বস্তি হয়, সেটা ছেলে বুঝতে পারে। কিনুত কিছু বলে না। ঘাঁটায় না আসলে। এসবের মধ্যেও কোথাও যেন একটা হিন্ট সে পাচ্ছিল, বাবা বোধহয় কিছু একটা মতলব করছে। কোনও বিপদ-আপদ ঘটিয়ে বসবে না তো? এদিকে মা প্রায়ই ফোন করে বলে, চুপিচুপি কাদের সঙ্গে যেন সাহিত্য সংসদ নিয়ে প্রায়ই কথা বলে তার বাবা। কী করবে ভাবছে বাবা? কোনও বড়সড় বিপ্লব-টিপ্লব ঘটিয়ে, কিছু একটা করে- টরে বসবে না তো? নবারুণ শিবতুল্য, তাই চটে গেলে রুদ্ররূপও ধরতে পারেন!

সোমবার রাতেই সরমার সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়েছে শুভ্রর। পরের দিন, মানে মঙ্গলবার সকালেই সরমার ফোনে ঘুম ভাঙে শুভ্রর, “বাবান, তোর বাবা আবার শতরঞ্চি গোটাতে চলে গেল।”

“মানে?” ঘুম কাটিয়ে বলে শুভ্র। কীভাবে রিঅ্যাক্ট করবে ঠিক বুঝতে পারল না। মায়ের ফোনে টেনশন বাড়বে ভেবেছিল, অথচ উল্টে ফিক করে হেসে ওঠে শুভ্র।
“মানে আবার সাহিত্য পরিষদ জয়েন করেছে চুপিচুপি। সবাই নাকি ওকে এতো রিকোয়েস্ট করেছে, যে ফেলতে পারেনি শেষমেষ,” এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে চলেন সরমা।
‘মা, আমার কিনুত মনটা অনেক হাল্কা লাগছে। তুমি একটু চুপ করে বসো, দেখবে তোমারও ভাল লাগবে। বাবা এবার ভাল থাকবে দেখো। ফোনটা রাখছি। একটু ঘুমিয়ে নিই, কলেজ ছুটতে হবে তো আবার,” ফোনটা কেটে দেয় শুভ্র।

কলকাতায় যে মেসবাড়িতে শুভ্র থাকে, সেই বাড়ির সিঙ্গল বেডের উপর গালে হাত দিয়ে বসে শুভ্র। মনে মনে ভাবে, যাক আর অস্বস্তি থাকবে না লোকটার। তার বাবা রবীন্দ্রনাথ নন, জীবনানন্দও নন। কিনুত ওঁদের মধ্যে যে সহজ-সরল প্রাণটা ছিল, সেটা ওর বাবার আছে। না হলে এতকিছুর পরও কেউ শতরঞ্চি গোটাতে যায়!
অঙ্কন : মহেশ্বর মণ্ডল

Download bangla books pdf

Be the first to comment

Leave a Reply