রক্ষাচক্র pdf – দেবমাল্য কর্মকার Rakkha Chakra pdf by Debmalya Karmakar

রক্ষাচক্র pdf - দেবমাল্য কর্মকার Rakkha Chakra pdf by Debmalya Karmakar
রক্ষাচক্র pdf - দেবমাল্য কর্মকার Rakkha Chakra pdf by Debmalya Karmakar

দেবমাল্য কর্মকার এর Rakkha Chakra pdf রক্ষাচক্র pdf ডাউনলোড করুন ও Rakkha Chakra pdf রক্ষাচক্র pdf পড়ুন।

রক্ষাচক্র pdf - দেবমাল্য কর্মকার Rakkha Chakra pdf by Debmalya Karmakar
রক্ষাচক্র pdf – দেবমাল্য কর্মকার Rakkha Chakra pdf by Debmalya Karmakar

Rakkha Chakra pdf রক্ষাচক্র pdf নমুনাঃ

আকাশের বুক চিরে নেমে আসছে এক/দু-ফোঁটা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। চারপাশের বাতাস ক্রমশ ঠান্ডা হতে আরম্ভ করেছে। এমন একটা সময় তারাপীঠ মহাশ্মশানে একটা মৃতদেহ নিয়ে প্রবেশ করলেন হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই মাঝারি বয়সের লোকজন। দেখে মনে হচ্ছে, যিনি মারা গিয়েছেন, তার আপনজন বলতে বিশেষ একটা কেউ নেই। জোরে বৃষ্টি এলে সমস্যা হয়ে যাবে – এই ভেবে চারপাশের লোকজন একপ্রকার তাড়াহুড়ো করেই দহনকার্য সেরে ফেলার জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগলেন। তার উপরে সামান্য একটু গাছের পাতা নড়তে-না নড়তেই চারপাশের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। থমথমে অন্ধকার মহাশ্মশানে গা-টা যেন শিরশিরিয়ে উঠছে কমবেশি প্রত্যেকের। তার উপরে বেশ খানিকটা দূর থেকে ভেসে আসছে যজ্ঞের হলদে আলোসহ গুরুগম্ভীর মন্ত্র উচ্চারণ। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে তান্ত্রিকরা নিজেদের সাধনে বসে পড়েছেন।

শুভঙ্করের ফাঁকি – দেবারতি মুখোপাধ্যায় Subhangkarer Fhaki by Debarati Mukhopadhyay

এদিকে ডোম এসে মৃতদেহের জন্য চিতার ব্যবস্থা করতে আরম্ভ করে দিয়েছে। উগ্র ধূপের গন্ধের সঙ্গে অন্যদিকের চিতায় জ্বলতে থাকা মৃতদেহের গন্ধ মিলেমিশে চারপাশের বাতাসকে যেন অদ্ভুতভাবে ভারী করে তুলেছে। অভ্যেস না-থাকা কারও যদি এই গন্ধ একবার নাকে যায় তাহলে বমি হওয়া নিশ্চিত। যতক্ষণে সব কিছুর প্রস্তুতি চলছে, ততক্ষণের আশপাশের লোকগুলো বিড়ি খাওয়া আরম্ভ করে দিয়েছে আর তার সঙ্গে ছোট্ট ব্যাগের মধ্যে থেকে বেরিয়ে এসেছে দুটো বাংলা মদের বোতল। যদিও তাদের চোখ-মুখ দেখে মনে হচ্ছে, খাওয়াদাওয়া অনেক আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে, কিন্তু তাতে বিশেষ কিছুই আসে যায় না।

খানিক বাদে দাহ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেল চিতা, অস্তিম কার্য করার জন্য উপস্থিত হলেন এলাকার হারু তান্ত্রিক। বৃষ্টি তখনও এক/দু-ফোঁটা করেই পড়ছে, তবে আকাশ আলো করে বেশ কয়েকটা বড়ো বড়ো বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে মাঝে মাঝে। সমস্ত নিয়মবিধি সম্পন্ন করার পর যখন চিতায় আগুন জ্বালাতে যাওয়া হবে, ঠিক সেই সময় আকাশ ফেটে গড়িয়ে পড়ল জলের ধারা। প্রচণ্ড অস্বাভাবিক মেঘের গর্জনে কেঁপে উঠল তারাপীঠের মহাশ্মশানভূমি। সেখানে উপস্থিত থাকা প্রত্যেকে বাধ্য হয়ে ছুটে গেল বেশ কিছুটা দূরে একটা ছাউনির দিকে এবং সেখানে দাঁড়িয়েই তারা অপেক্ষা করতে লাগ্ল প্রকৃতির রাগ কমার জন্য। এদিকে রাত ক্রমশ বাড়তে আরম্ভ করেছে, বৃষ্টির তেজ খুব একটা কমেনি।

গল্পগুলো অন্যরকম pdf – আরিফ আজাদ – Golpogulo Onnorokom pdf – Arif Azad

তার উপরে মৃতদেহসহ চিতা পুরোটাই এই তীব্র বৃষ্টিতে ভিজে একদম চপচপে হয়ে গিয়েছে, সুতরাং এই মুহূর্তে যদি বৃষ্টি কমেও যায় তাহলেও দহনকার্য করা বেশ খানিকটা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। অগত্যা সবাই মিলে ঠিক করল, দেহটাকে যদি আজকে রাতে কোনোরকমভাবে সংগ্রহ করে রেখে পরের দিন সকালে সৎকার করা যায় তাহলে বেশ ভালো হয় এসব নানান বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে করতেই বৃষ্টির প্রভাব বেশ খানিকটা কমে এল। খানিক বাদে যখন সবাই ভেজা চিতার সামনে গিয়ে দাঁড়াল, তখন প্রত্যেকের চোখ একপ্রকার বড়ো বড়ো হয়ে গিয়েছে, তাদের সবার মুখে নেমে এসেছে একটা বিস্ময়ের ছায়া। আসলে কাঠের চিতাটা যেমন পড়েছিল, সেরকমই রয়েছে, কিন্তু সমস্যাটা হল মৃতদেহটা আর তার মধ্যে নেই…..

সকাল এখন প্রায় সাড়ে নটা বাজে। জোরে একটা হর্ন দিয়ে বর্ধমান স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে গেল মা তারা এক্সপ্রেস। চলন্ত ট্রেনের মধ্যে জানালার ধারে বসে কানে হেডফোন লাগিয়ে একমনে বাদাম খাচ্ছিল ঈশা। আর ওর ঠিক পাশেই ফোনের দিকে তাকিয়ে মুখ চেপে হাসছিল ওর বোন স্নেহা এবং জেঠুর ছেলে সবজিৎ। ঈশা ওদের হাসির কারণ জানতে চাইলে সর্বজিৎ ওর বয়ফ্রেন্ডের নাম নিয়ে ইচ্ছা করে চটিয়ে দেয় মেয়েটাকে। তারপর তিনজনের মধ্যে শুরু হয়ে যায় হালকা খুনশুটি। এসব চলতে চলতে খানিকক্ষণ বাদে ওদের প্রত্যেকের নজর পড়ল ট্রেনের জানালার দিকে। বাইরেটা তখন সবুজ অরণ্যে ঢেকে গিয়েছে। একটার পর একটা বয়ে চলেছে গাছপালা, ছোটো ছোটো মাটির ঘরবাড়ি, পুকুরপাড় এবং আরও নানান জিনিস।

ওরা তিনজনই যেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে ছিল বাইরের পরিবেশের দিকে। আসলে যারা শহরে থাকে, তারাই গ্রামের পরিবেশের মাহাত্ম্যটা বুঝতে পারে। এই খোসা আকাশ, সবুজ মাঠ, পুকুরের জলে চলতে থাকা রাজহাঁস, অশ্বত্থের ছায়ায় বিশ্রাম নেওয়া পথিক…. এই সবটাই যেন মনের কোনায় একটা আলাদা অনুভূতি তৈরি করে।


Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply