ছায়ামানব pdf – শরীফুল হাসান Chayamanob pdf – Shariful Hasan

ছায়ামানব pdf - শরীফুল হাসান Chayamanob pdf - Shariful Hasan
ছায়ামানব pdf - শরীফুল হাসান Chayamanob pdf - Shariful Hasan

শরীফুল হাসানের অশরীরী-অতিপ্রাকৃতিক এক গল্প Chayamanob pdf ছায়ামানব pdf ডাউনলোড করুন ও Chayamanob pdf ছায়ামানব pdf পড়ুন।

ছায়ামানব pdf - শরীফুল হাসান Chayamanob pdf - Shariful Hasan
ছায়ামানব pdf – শরীফুল হাসান Chayamanob pdf – Shariful Hasan

Chayamanob pdf ছায়ামানব pdf নমুনাঃ

রুমানার একা থাকার অভ্যাস নেই। রাতে একা থাকতে তার ভয় করে, সেই ছোটবেলা থেকেই। এই নিয়ে ঝামেলাও কম হয় নি। স্বামীকে নিয়ে প্রথমবার যখন ঢাকায় এলো, সাথে করে ছোট একটা কাজের মেয়ে নিয়ে এসেছিল। সেই মেয়েটা থাকায় রক্ষা। শামীম সকালে অফিসে যায়, রাতে ফেরে। এই এতোটা সময় কাজের মেয়ে জেসমিন সাথে থাকে। ওকে চোখের আড়াল করে না কখনো। শামীম কখনো ঢাকার বাইরে গেলে, জেসমিনকে মেঝেতে বিছানা করে দেয়। এক রুমে একা থাকার যন্ত্রণা থেকে বাঁচা যায় অন্তত।

আরোহী অন্ধ প্রহর pdf – রবিন জামান খান Arohee Andho Prohor pdf – Robin Zaman Khan

এবার শামীম তিনদিনের জন্য সিলেট যাচ্ছে, খবরটা শোনামাত্র জ্বর চলে আসার অবস্থা রুমানার। না গিয়ে কোন উপায় নেই। বৌ একা থাকতে ভয় পায় বলে স্বামী শহরের বাইরে যাচ্ছে না এই ব্যাপারটা ঠিক ভালো শোনায় না।
বহুতল এই বাড়ির বারোতলার ডান দিকের কোনার ফ্ল্যাটটা ভাড়া নিয়েছে ওরা। শুরুতে এতো উঁচুতে থাকতে রাজি হচ্ছিল না রুমানা, মনে হয়েছিল ভূমিকম্প যদি হয় তাহলে আর রক্ষে নেই। কিন্তু ফ্ল্যাটের বারান্দায় এসে সিদ্ধান্ত বদলাতে এক সেকেন্ডও লাগে নি। এতো চমৎকার বাতাস, মনে হচ্ছিল উড়িয়ে নিয়ে যাবে তাকে। আশপাশে বেশ বাড়িঘর থাকলেও এতো উঁচু কোন অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং নেই, ফলে চারপাশের বাতাস যেন আলাদা করে ঘিরে রাখে ওপরের তলার মানুষগুলোকে।

মাত্র পনেরোদিন হলো এই ফ্ল্যাটে উঠেছে রুমানা। তারপরও এই পনেরো দিনেই মনে হচ্ছে এরচেয়ে আপন কোন জায়গা তার
কখনো ছিল না। ছিমছাম নিরিবিলি। বিরক্ত করার কেউ নেই। পাশের ফ্ল্যাটে কে থাকে না থাকে সে খবর নেয়ারও প্রয়োজন নেই। এমন নয় যে রুমানা অসামাজিক, কিন্তু অচেনা শহরের লোকজনদের সাথে একটু কন কন মেলামেশাই ভালো।
শামীন সকালে বের হয়ে গেছে, ব্যাগ-পত্র গুছিয়ে, যাবার আগে হাতে কিছু টাকা দিয়ে গেছে আর বলে গেছে সবসময় মোবাইল ফোনটা যেন হাতের কাছে রাখে, অচেনা কেউ এলে যেন দরজা খুলে না দেয়, এসব সাধারন সাবধানবানী। শামীম চলে যাবার পর সারা সকাল ঘুমিয়ে কাটিয়েছে রুমানা, দুপুরে উঠে কোনমতে একটু খেয়েছে, তারপর আবার ঘুম। সেই ঘুম ভাঙল সন্ধ্যার একটু আগে।

হাত-মুখ ধুয়ে সন্ধ্যার পরপর জেসমিনকে সাথে নিয়ে বসেছিল রুমানা। বারান্দায়। বারান্দাটা বেশ বড়। খোলামেলা, বেডরুমের সাথে একটা স্লাইইডিং দরজা দিয়ে আলাদা করা। স্লাইডিং দরজার উপর যে পর্দা থাকে তা গুটিয়ে রাখলে দিনের আলোয় পুরো ফ্ল্যাটটা আলোকিত হয়ে থাকে। আর জোছনা রাতে চাঁদের আলোয় ভেসে যায়।
তবে আজ জোছনা নয়, আজ অনাবশ্যা। আশপাশের বাড়িগুলোর বাতি জ্বলছে, দূর আকাশের তারার মতো। চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে জেসমিনকে বলল চুল টেনে দিতে রুমানা। মেয়েটা খুব মনোযোগ দিয়ে চুল টেনে দিচ্ছিল। সারাদিন পড়ে পড়ে ঘুমিয়েও ঘুন যেন কাটে নি, ওর চুল টানায় আবার চোখ বন্ধ করল রুমানা। এতো আরাম লাগছিল ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। একই সাথে এলোমেলো বাতাসে শরীর জুড়িয়ে যাচ্ছে।

বেশ অনেকক্ষন পর চোখ খুলল রুমানা, মনে হলো মাথায় বিলিকাটা হাত দুতো থেমে গেছে। চুল টানতে টানতে নেয়েটা ঘুমিয়ে পড়ল নাকি দেখার জন্য তাকাল। চোখ খুলে তাকিয়ে কোথায় আছে বুঝতে একটু সমস্যা হলো রুমানার। বারান্দায় যে চেয়ারে বসেছিল, সে চেয়ারটা একটু বাঁকানো। আরাম করে বসা যায়, হেলান দিয়ে। এখনও একই চেয়ারে বসে আছে সে। তবে সমস্যা হচ্ছে চেয়ারটা এখন আর বারান্দায় নেই। বরং বারান্দার রেলিং পার করে শুন্যে ভাসছে।

বারান্দা থেকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে জেসমিন, এতো দূর থেকেও ওর ছলছল চোখ দেখতে পেল রুমানা। শুন্যে ভাসমান চেয়ার থেকে জেসমিনের দিকে হাত বাড়াল। এতে যেন বারান্দা থেকে আরো দূরে সরে গেল রুমানা।
নিচের দিকে তাকাল। অনেক অনেক নিচে রাস্তাটা চোখে পড়ছে, রিক্সা, গাড়ি, বাস চলছে। যেভাবে চলার কথা। আশপাশের বাড়িঘরগুলোর দিকে তাকাল। সবগুলো বাড়ির বাতি জ্বলছে, তবে কেউ এদিকে তাকিয়ে নেই। কারো না কারো চোখে পড়ার কথা। নিশ্চয়ই স্বপ্ন দেখছি আমি, ভাবল রুমানা। দুঃস্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই না। কাজেই ভয়ে কাতর হওয়ার চেয়ে এ অবস্থাটা উপভোগ করা উচিত।

বাতাস পাক খাচ্ছে চারপাশে, হাত দিয়ে বাতাসে একটু ধাক্কা দিতে নিজের ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে পাশের ফ্ল্যাটের বারান্দার দিকে চলে এলো রুমানা। এই বারান্দাটা অন্ধকার। কেউ নেই বাসায় সম্ভবত।
এই ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সাথে পরিচয় আছে, বয়স্কা ভদ্রমহিলা তার অবিবাহিত তরুন ছেলেকে নিয়ে থাকেন, ছেলে সম্ভবত ইউনিভার্সিটির শিক্ষক, কিসের শিক্ষক কিংবা আরো বিশদ কিছু জানতে চায় নি রুমানা, দরকার কি !
বারান্দা পার হয়ে একটা রুমের জানালার কাছে গিয়ে আটকাল চেয়ারটা। পর্দা সরানো, তাই পুরো ঘরটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। দেয়ালে টানানো ঘড়ির দিকে নজর গেল রুমানার। ঘড়ি বলছে রাত দুটো বাজে। অথচ একটু আগেই না সন্ধ্যে হলো! চেয়ারটা হঠাত নড়ে উঠল প্রচন্ড গতিতে, বাতাস ধাক্কা দিচ্ছে, উলটে ফেলতে চাচ্ছে রুমানাকে।

Chayamanob pdf download link
Download / Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply