প্রেমেন্দ্র মিত্রের হাসির গল্প পিডিএফ Hasir Golpo pdf – Premendra Mitra

প্রেমেন্দ্র মিত্রের হাসির গল্প পিডিএফ Hasir Golpo pdf - Premendra Mitra
প্রেমেন্দ্র মিত্রের হাসির গল্প পিডিএফ Hasir Golpo pdf - Premendra Mitra

প্রেমেন্দ্র মিত্রের হাসির গল্প পিডিএফ Hasir Golpo pdf ডাউনলোড করুন ও প্রেমেন্দ্র মিত্রের হাসির গল্প পিডিএফ Hasir Golpo pdf পড়ুন।

প্রেমেন্দ্র মিত্রের হাসির গল্প পিডিএফ Hasir Golpo pdf - Premendra Mitra
প্রেমেন্দ্র মিত্রের হাসির গল্প পিডিএফ Hasir Golpo pdf – Premendra Mitra

প্রেমেন্দ্র মিত্রের হাসির গল্প পিডিএফ Hasir Golpo pdf সূচী

ভূপালের কপাল
পরোপকার
নিরুদ্দেশ
সামু ও দুধরাজকুমার
অপরূপ কথা
বিশ্বস্তরবাবুর বিবর্তনবাদ

ভূপালের সঙ্গে সেদিন হঠাৎ দেখা হয়ে গেল। জরুরী কাজে টালীগঞ্জ যাচ্ছিলাম, হঠাৎ পেছন থেকে আমার নাম ধরে এক চীৎকার! চীৎকার না বলে আর্তনাদ বলাই উচিত। মানুষ মানুষকে শুধু ডাকবার আওয়াজ করে না।
জন্যে অমন ভয়ানক কি হ’ল বুঝতে না পেরে সভয়ে পেছন ফিরেই ব্যাপার বুঝতে পারলাম। পেছনে ট্রামের ভাঁড়ের ভেতর দাঁড়িয়ে ভূপাল।

Anandamela 5 February 2022 pdf আনন্দমেলা ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ পিডিএফ

বাইরে বৃষ্টি নেমেছে বলে ট্রামে বেশ ভীড়। ট্রামের সীটে না কুলোবার দরুন অনেকেই দাঁড়িয়ে আছে। ভূপাল তারই ভেতর দিয়ে গম্ভীরমুখে এগিয়ে এল। সে কারুর পা মাড়িয়ে, কারুর কাপড়ে জুতোর কাদা লাগিয়ে, কাউকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে যে ভাবে সে ঝড়ের মত ছুটে এল তাতে মনে হ’ল যেন আমার কাছে আসার ওপর তার জীবন-মরণের সমস্যা নির্ভর করছে।

সাধারণ এগিয়ে আসা নয়, উৎসুক হয়ে তাই তার দিকে তাকালাম। কিন্তু কাছে এলে সে শুধু বললে— “তুই!” যেন এতক্ষণ সে আমার জায়গায় আর কাউকে বসে থাকতে দেখেছিল।
তার চীৎকারে ও এই সম্ভাষণে একটু অভিভূত হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু কিছু বলতে পারলাম না। ভূপাল নিজেই আবার বললে—“ঈস্, কতদিন বাদে দেখা !”
এবার একটু সামলে নিয়েছি, বললাম – “হ্যাঁ, অনেকদিন, এখন যাচ্ছিস্ কোথায় ?”
“আমি! একটু বালীগঞ্জে যাব ভাই।”
“বালীগঞ্জ !” আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। “হ্যাঁ বালীগঞ্জ! কেন বালীগঞ্জে গেলে কি হয়?”

কোন রকমে হাসি চেপে আমি বললাম— “না, হয় না’ কিছু, কিন্তু এ ত’ টালীগঞ্জের ট্রাম!”
ভূপাল এবার একটু অবজ্ঞার হাসি হাসলে। আমার মস্তিষ্কের সুস্থতায় যেন তার বিশ্বাস নেই। তার ভাব দেখে একটু বিরক্ত হয়ে বললাম – “ ‘এটা যে টালীগঞ্জের ট্রাম, দেখে উঠিনি?”

ভূপাল তবু বিজ্ঞের মত গম্ভীর স্বরে বললে — “ টালীগঞ্জ যেতে চাস্ ত’ তাড়াতাড়ি নেমে যা।”
এরপর আর কি করে তাকে বোঝান যায়! আমার একার দ্বারা সম্ভবও হ’ত না, যদি না সে সময়ে পাশের কয়েকজন ভদ্রলোক বলে উঠতেন— “আরে এটা যে সত্যি টালীগঞ্জের ট্রাম মশাই!”
এবার ভূপালের বুঝি টনক নড়ল। একটু সন্দিগ্ধভাবে সে বললে— “কিন্তু আমি যে দেখে উঠলাম। ”
সবাই এবার বললাম—“কিন্তু আমরা এতগুলো লোক কি ভুল করেছি?”
ভূপাল এবার মাথা চুলকে বললে — “তাই ত’। বড় মুশকিল হ’ল ত’ দেখি! এই বৃষ্টির ভেতর আবার নামতে হবে। কতক্ষণ আবার বালীগঞ্জের ট্রামের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হবে তাই বা কে জানে।”
তার অবস্থা দেখে এবার করুণা হচ্ছিল, বললাম – “তোর যেমন বুদ্ধি। একটু না দেখে ওঠার জন্য এই কৰ্মভোগ হ’ল ত’!” ভূপাল চুপ করে রইল।

নিঃসঙ্গতার একশ বছর pdf – গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস Nishshongotar Eksho Bachhor pdf – Gabriel Garcia Marquez

কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন ভোগ তাকে ভুগতে হ’ল না। রাসবিহারী এভিনিউর মোড়েই তার বৃষ্টির ভেতর নামবার কথা। হঠাৎ কেমন করে সেইখানেই ট্রামের কারেন্ট গেল বন্ধ হয়ে। কারেন্ট ফিরে আসার আগেই দেখা গেল সারের পর সার ট্রাম দাঁড়িয়ে আছে। ভূপাল তার ভেতর না ভিজেই ট্রাম পেয়ে গেল।
ভূপালকে এর মধ্যেই বেশ ভালো করে বোধহয় চেনা গেছে। এমন আগা আগোছালো লোক দুনিয়ায় যদি আর ছুটি থাকে। সব সময়েই সে অন্যমনস্ক, সব কাজেই তার গতি। কীর্তি তার অনেক, বলে শেষ করা যায় না।

ভূপালের সঙ্গে হয়ত অপরিচিত এক ভদ্রলোকের বাড়ীতে দেখা করতে গেছি, বৈঠকখানার চাবি খুলে দিয়ে চাকর হয়ত ভেতরে খবর দিতে গেছে। দেখি ভূপাল ঘরে ঢুকেই সটান একেবারে সুইচ বোর্ডের কাছে গিয়ে হাজির। সুইচ বোর্ডে অনেকগুলো সুইচ, আলোর পাখার প্রভৃতি।
জিজ্ঞাসা করলাম—“করছ কি ভূপাল?”

“দাড়াও না, বড্ড গরম। ” বলে ভূপাল একটা সুইচ টিপে দিয়ে চেয়ারে এসে আরাম করে বসে পড়ে চোখ বুজে বললে- “আঃ!”
চটে উঠে বললাম—“আঃ কি হে?”
ভূপাল চোখ বুজেই বললে— “আঃ কি ঠাণ্ডা!”
“কোথায় ঠাণ্ডা, চেয়ে দেখ দেখি একবার!”
ভূপাল একবার চোখ খুলে চাইল, তারপর একটু বিরক্ত হয়ে বললে-“ওঃ আলোটা জ্বেলেছি বুঝি!”
“কিন্তু, আঃ করছিলে কেন?”
এবার ভূপালের মুখে আর কথা নেই। কিন্তু তা বলে ভেবো না যে ভয়ানক লজ্জিত হ’ল।
ভূপাল সে সবের ধার ধারে না। ভুল করা না করায় তার কিছু আসে যায় না। সব সময়ে সে নির্বিকার নিশ্চিন্ত।

তার নির্বিকার নিশ্চিন্ত হবার অবশ্য কারণ আছে একটা। কারণটা হচ্ছে তার কপাল। এরকম পৃথিবীতে কারও হয় না। লটারীতে অনেকে লাখ লাখ টাকা পেতে পারে, খানায় পড়ে গিয়ে কারু কারু মাটিতে পোঁতা সোনার ঘড়ায় হাত কেটে যায়, কিন্তু ভূপালের তুলনায় তাদের ভাগ্য কিছুই নয়। ভাগ্য তাদের একবারই কৃপা করে, কিন্তু ভূপালের বেলা ভাগ্যের ক্লান্তি নেই, নেই বিরক্তি। বালীগঞ্জের বদলে টালীগঞ্জের ট্রামে চেপে তাকে ভুগতে হয় না কোন দিন। তার কপালে উপযুক্ত সময়ে ট্রামের কারেন্ট যায় বন্ধ হয়ে । ভূপাল তাই বেপরোয়া ভাবে চলে।

Hasir Golpo pdf download link
Download / Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply