অন্ধকার লেখাগুচ্ছ pdf – শ্রীজাত Ondhokar Lekhaguccho pdf – Srijato

অন্ধকার লেখাগুচ্ছ pdf - শ্রীজাত Ondhokar Lekhaguccho pdf - Srijato
অন্ধকার লেখাগুচ্ছ pdf - শ্রীজাত Ondhokar Lekhaguccho pdf - Srijato

শ্রীজাত এর কবিতার বই Ondhokar Lekhaguccho pdf অন্ধকার লেখাগুচ্ছ pdf ডাউনলোড করুন ও Ondhokar Lekhaguccho pdf অন্ধকার লেখাগুচ্ছ pdf পড়ুন।

অন্ধকার লেখাগুচ্ছ pdf - শ্রীজাত Ondhokar Lekhaguccho pdf - Srijato
অন্ধকার লেখাগুচ্ছ pdf – শ্রীজাত Ondhokar Lekhaguccho pdf – Srijato

Ondhokar Lekhaguccho pdf অন্ধকার লেখাগুচ্ছ pdf  ভূমিকা

কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে একবার প্রবেশ করলে কোনো কিছুর অস্তিত্ব থাকে না। মহাকাশের চাদরে মিশে থাকা নকশার মতন এরাও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দানবীয় উপস্থিতি নিয়ে, ভয়াল এবং অপরিমেয় ঋণাত্মক শক্তি নিয়ে। কৃষ্ণগহ্বরে ঢোকার পথ আছে, বেরনোর উপায় নেই। কারণ সে যাবতীয় বস্তুকে মুহূর্তে অনস্তিত্বে পরিণত করবার ক্ষমতা রাখে, যে কোন পার্থিব পদার্থের মূল গঠনকে লহমায় ভেঙে ফেলার জাদু জানে। বস্তু বা পদার্থ তো তুচ্ছ, তামাম ব্রহ্মাণ্ডে যার অবাধ ছোটাছুটি, সেই সর্বত্রগামী আলোকেও খেয়ে ফেলতে পারে সে। রইল বাকি একজন, স্বয়ং সময়। সেই চিরঅস্পৃশ্য অথচ সদাবহমান মাত্রাটিকেও কৃষ্ণগহ্বর দুমড়ে মুচড়ে অস্তিত্বহীন করে ফেলতে পারে। তাই কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে কিছু নেই, সময়ও না, আছে কেবল এক বিশাল নাস্তি। না থাকার মহাপরিসর।

মানবসভ্যতাও, নিজেরই মুদ্রাদোষে, বহুবার ঋণাত্মক শক্তিপুঞ্জের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে, উঠে দাঁড়িয়েছে, ভুল শুধরে নেবার চেষ্টা করেছে, আবার ভেঙেছে। কিন্তু না, মচকায় নি কখনো। আজ, এই ২০১৫ সালে দাঁড়িয়ে আমরা সেই না- মচকানো মানবসভ্যতাকে নুয়ে পড়তে দেখছি। এত হাজার বছরের ভাঙা-গড়া আগলে রাখা এই সুবৃহৎ সভ্যতা সম্ভবত আবার সেই কৃষ্ণগহ্বরে প্রবেশ করছে আর বেষ্টনী থেকে আর কোনদিন বেরোতে পারবে না। বেরোতে হলে যে ন্যূনতম অস্তিত্বটুকু প্রয়োজন সেটুকুও থাকবে না তার।

ক্যাপ্টেন টমসনের গুপ্তধন pdf – সৌরভ মুখোপাধ্যায় Captain Tomsoner Guptadhan pdf – Sourav Mukhopadhyay

দুঃসময়
এ কেমন সময়, যখন ধর্মকে অজুহাত করে একের পর এক প্রাণ কেড়ে নেওয়া খুব সহজ আর নিয়মিত একটা কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা জানি আগেও হয়েছে এমনটা। কয়েক হাজার বছরের ইতিহাস ওল্টালে ধর্মের নামে সন্ত্রাস জারি করার নজির নেহাত কম পাওয়া যাবে না। সে সমস্ত ঘটনাই পুঞ্জীভূত হয়ে আজকের এই কৃষ্ণগহ্বর প্রস্তুত করেছে।

যার বিশালত্বের সামনে আমরা কণারও অধম হয়ে দাঁড়িয়ে নিপাট ও নিপুণ নিধন- উৎসব দেখছি, যার পৃষ্ঠপোষকতায় ধর্মের পতাকা টাঙানো আছে। যার বিরূদ্ধে দুখে দাঁড়ানোর আগে আমরা দশবার ভাবছি। কারণ, সামনের মানুষটির প্রাণ গেলেও আমার ও আমার পরিজনদের জীবন সুরক্ষিত। কিছুতেই বুঝতে পারছি না যে, আমরা একটাই ভেলার বিভিন্ন অংশে বসে রয়েছি এবং সেটি দ্রুতগতিতে এই ধ্বংসের আগুনের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। আমি চুপ করে থাকলে প্রাণে বেঁচে যাব এমন নয়। আমারও সময় আসছে, মুহূর্তে ছাই হয়ে যাবার।

এমন একটা সময় দাঁড়িয়ে আমি আমার ‘অন্ধকার লেখাগুচ্ছ’কে পেয়েছে আমি। চেয়েওছি ভীষণ ভাবে। একের পর এক স্বাধীন কণ্ঠকে রূদ্ধ করে দেবার হাতিয়ার হিসেবে যখন সরাসরি মৃত্যুকেই ব্যবহার করা হচ্ছে, যখন সামাজিক মাধ্যমে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে নিজের মত জাহির করার জন্য প্রাণ হারাতে হচ্ছে রাজপথে আর যখন সেসব ঘটনা দুদিন পরেই আর পাঁচটা খবরের আড়ালে চলে যাচ্ছে যতক্ষণ না আরেকটি শবদেহ আবিষ্কৃত হচ্ছে, তখন চুপ করে অপেক্ষা করার সময়টা আমরা পেরিয়ে এসেছি নিঃসন্দেহে।

চুপ করে থাকতে না পেরেই লিখে ফেলা, লিখে চলা ‘অন্ধকার লেখাগুচ্ছ’। আর তাদের যতদূর সম্ভব ছড়িয়ে নেবার প্রয়াসই সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কি হবে তাতে? বাংলা ভাষায় লেখা কয়েকটি কবিতার জন্য অগুনতি মানুষের শুভবোধ জাগ্রত হবে? চপাতি ও তরবারি ফেলে দিয়ে ধর্মের নাম- ভাঙানো আততায়ীরা বদলে যাবে? আমি মূর্খ নই। এসব হবার থাকলে বহু আগে পৃথিবী কেবল কবিতার হাত ধরেই সুসভ্য হয়ে যেতে পারত, হয়নি। আমি জানি, কিছুই হবে না। কাল আরেকটা লাশ পড়বে কোথাও, পরও আমি আরও একটি লেখা লিখব এই সিরিজে। এ এক অতি- অসমযুদ্ধ, যার দুটো কিনারা কোনওদিন মুখোমুখি হবেনা।

দুঃসময়ের কবিতা
কিন্তু এই যে আমি, সামান্য একজন কবিতালেখক, যে দিনের পর দিন যন্ত্রণায় কুঁকড়ে গিয়েও বেঁচে আছে, সে তা হলে কি করবে? মিছিল ডাকবে? শাসক বা বিরোধীদলে যোগ দেবে? নাকি সন্তর্পণে পাশ কাটিয়ে চলে যাবে, যেন কিছুই ঘটেনি? সে হয়তো লিখতেই চাইবে শেষ পর্যন্ত। হয়তো সে লেখা পৌঁছবে না কোথাও, না- পৌঁছোক। আসলে তো এমন একটা সময়ে সে নিজেই তার লেখার কাছে পৌঁছোতে চায়, অন্ধকার নেমে আসতে দেখে শিশু যেমন মায়েরই কোল খোঁজে।

হ্যাঁ, এটা ধর্মযুদ্ধ। আমাদের ধর্ম যদি হয় বাঁচা, তাহলে সেই ধর্মের সঙ্গে অন্ধ মৌলবাদের যুদ্ধ। যার কোন ধর্ম নেই, হত্যা ছাড়া। যখন লিখতে শুরু করেছিলাম তখন ভাবিনি এত এত মানুষকে পাশে পাব। তাঁদের সমর্থনে জোর পাবো। যারা এই লেখাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের পা মেলানোকে কুর্নিশ জানাই। যাঁরা রোজ আমায় ভরসা জুগিয়েছেন, তাঁদের মনস্কতাকে আমার সেলাম।
আর সবরকম সমালোচনাকে জানাই স্বাগত। এ লেখা তো আমি একা লিখছি, এ আমাদের সম্মিলিত প্রয়াস। একটাই মিছিল যাতে অনেকে হাঁটছেন। এ আমাদের অন্ধকার, এরা আমাদেরই লেখা।

দুঃসময়ের কৃষ্ণগহ্বর
আমরা যেন ভুলে না যসি, এ আসলে মানবসভ্যতার সঙ্গে হিংসার লড়াই। এর মধ্যে কোথাও প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের কোন ভূমিকা নেই। ধর্ম ধারণ করতে শেখায়, সহিষ্ণু হতে বলে। কেউ প্রশ্ন তুললে তার গলা নামিয়ে দেবার নির্দেশ পৃথিবীর কোন ধর্মে নেই। এই সংকটের সময়েও যাঁরা আক্রমণকারী ও নিহতদের প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম দেখে তবে মন্তব্যের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করছেন, তাঁদের মৌলবাদী মনোভাবের জন্য আমাদের সমবেদনা রইল। এটা ছেলেখেলার সময় নয়।

কৃষ্ণগহ্বর আসলে সেই চক্রব্যূহ, অভিমন্যু যার প্রবেশপথ জানত কিন্তু নিষ্ক্রমণের কৌশল জানত না। গোটা মানবসভ্যতা এখন অভিমন্যুর জায়গায় দাঁড়িয়ে। একটু পরেই হয়তো সে শহীদের সম্মান লাভ করবে কিন্তু জয় অধরাই থেকে যাবে। অসহায় পরাজিত যোদ্ধারাই আমাদের মহাকাব্যে নায়ক হয়ে থাকেন।
আজ সেই রীতির মাসুল দেবার সময় এসেছে। কেবল মুছে যাবার আগে কিছুক্ষণও যদি হাতে হাত মিলিয়ে দাঁড়াতে পারি, মৃত্যুর সময় মাথাটা অন্তত উঁচু থাকবে। আর কিছু না।

Ondhokar Lekhaguccho pdf অন্ধকার লেখাগুচ্ছ pdf download link
Download / Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply