পিতৃপক্ষ pdf Download করার পূর্বে পিতৃপক্ষ সম্পর্কে একটু জেনে নিতে পারেন।
কাল বাবার সঙ্গে দেখা হবে। প্রায় বাইশ বছর পর। উত্তেজনা নয়, এক ধরনের অস্থিরতায় ঘুম আসছে না বরুণের। তখন দশ বছর বয়স, বাবার সঙ্গে শেষ দেখা। ঝাপসা স্মৃতি। সেইসব চলমান স্মৃতির সঙ্গে বাড়ির অ্যালবামে রাখা বাবার স্টিল ফটোর কোনও মিল নেই।
গত বাইশ বছর ধরে বাবার উন্মাদ অবস্থা। প্রথম দিকে বাড়িতে রাখার চেষ্টা হয়েছিল। বরুণ অবশ্য সেই বাবাকে দেখেনি, মানুষ হয়েছে স্কুল হস্টেলে। ভয়ঙ্কর ভায়োলেন্ট ছিলেন। দাদা দেখেছে। বোন খুবই ছোট, কিছুই বুঝত না। বাবাকে রাখতে হয়েছিল অ্যাসাইলামে। বরুণদের আর্থিক পরিস্থিতি তখন ভাল না। সাধারণ মানের মানসিক হাসপাতালে ছিলেন বাবা। অবস্থার যেমন যেমন উন্নতি হয়েছে, বাবার অ্যাসাইলামের মান গেছে বেড়ে। বাবা নিশ্চয়ই টের পাননি।
বরুণরা দু ভাই এক বোন কোনওদিনই হাসপাতালে বাবাকে দেখতে যায়নি। মা চাইত না যেতে দিতে। মায়ের এরকম একটা ধারণা সম্ভবত ছিল, পাগলামি বুঝি সংক্রামক। বিশেষ করে নিজের রক্তধারায় দ্রুত ছড়ায়।
বাবার না থাকাটাতেই অভ্যস্ত ছিল বরুণরা। মা সেই সময় খুব কষ্ট করে সংসার চালিয়েছে। পাশে সেজমামা সব সময় ছিল। কম হলেও, বাবার অফিস থেকে টাকা আসত নিয়মিত। দুজন আশ্রিত ছিল বরুণদের সংসারে। বাবার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর স্ত্রী আর মেয়ে। যমুনাকাকি এবং বৃষ্টি।
এত অস্বাচ্ছন্দ্যের মধ্যে মা যে কীভাবে দুই ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করে তুলল, বিয়ে দিল বৃষ্টির আর বোনের, ম্যাজিক মনে হয়। এখন সংসারে কোনও টানাপড়েন নেই। দাদা জার্মানিতে প্রফেসারি করে। বরুণ বহুজাতিক কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার। থাকে দিল্লিতে। বরুণ বিবাহিত। একটি বছর চারেকের ছেলে আছে তার। দেবপাড়ার এই বাড়িটা বাবা নিজে দাঁড়িয়ে তৈরি করিয়েছিলেন। বরুণ যেহেতু ছাত্রজীবনটা হস্টেলে কাটিয়েছে, দেবপাড়ার বাড়ি নিয়ে হোমসিক হয় না।
বাবাকে নিয়েও তার তেমন কোনও কৌতূহল নেই। মা চিঠিতে এমনভাবে অনুরোধ করল, না এসে পারল না। তনিমা আসতে চেয়েছিল, বরুণ রাজি হয়নি। বলেছে, আগে দেখে আসি কতটা সুস্থ হয়েছেন। তারপর তুমি যেয়ো। বিয়ের পর তনিমা প্রায়ই বায়না ধরত, চলো না, অ্যাসাইলামে গিয়ে তোমার বাবাকে দেখে আসি।
পিতৃপক্ষ pdf download
সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায় এর pdf book পিতৃপক্ষ pdf download করুন এখান থেকে। banglabookspdf.com বই পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরিই করার লক্ষ্যে নেটে পাওয়া কিছু pdf শেয়ার করে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.