রহস‍্যাবৃত pdf – শাশ্বত ধর Rahasyabrito pdf – Saswata Dhar

রহস‍্যাবৃত pdf - শাশ্বত ধর Rahasyabrito pdf - Saswata Dhar

শাশ্বত ধর এর ফিকশন বই Rahasyabrito pdf রহস‍্যাবৃত pdf পড়ুন।

রহস‍্যাবৃত pdf - শাশ্বত ধর Rahasyabrito pdf - Saswata Dhar
Rahasyabrito pdf সূচিপত্র

উপেক্ষিত নায়ক १
আগমন
১৭
একটি বাঙালি দৈত্যের গল্প
রাজা দেবীদাস
৩৩
মনের কোণের বাইরে 80
মরণডাক ৫১
দহন ক্ষুধা ৬৫
ফিরে এল ফেলুদা
নটরাজ রহস্য ৯৮

Rahasyabrito pdf নমুনাঃ

আস্তে আস্তে চোখের পাতা খুলল জয়নাগ। চোখের পাতাগুলো অসম্ভব ভারী লাগছে। চারিদিক অন্ধকার। উঠে বসার চেষ্টা করল সে। একবারে পারল না। মাথায় অসম্ভব যন্ত্রণা। দূরে মশালের আলো দেখা যাচ্ছে। একটু শুয়ে থাকতে থাকতে চোখটা সয়ে এল। মাথায় হাত দিয়ে বুঝতে পারল মাথা থেকে রক্ত বেরিয়ে এসে লেগেছে মুখে চোখে। আশেপাশে পড়ে আছে অনেকগুলো দেহ। এদিক-ওদিক তাকিয়ে উঠে বসল জয়নাগ। পায়ে পায়ে এগিয়ে গেল, যেদিকে পড়ে আছে তার আবাল্য সঙ্গী মহারাজ মানবাদিত্যের দেহ। রাজবাড়ির দিকে তাকাল সে। রাজবাড়ী শত্রু করতলাগত হয়েছে। হবারই ছিল।

যুদ্ধে সে যখন জ্ঞান হারায় ততক্ষণে মানবাদিত্য প্রাণ হারিয়েছেন। বেশিরভাগ সৈন্যই মারা গেছে। মানবাদিত্যের বেশি সৈন্য অবশিষ্ট ছিল না। এদিকে ভাস্কর বর্মার সৈন্যরা মানবাদিত্যের মৃত্যুর পর কচুকাটা করছিল তাঁর সৈনিকদের। তাই রাজবাড়ি যে শত্রুদের দখলে গেছে তাতে জয়নাগ খুব একটা অবাক হয়নি। Rahasyabrito pdf

মহারাজ শশাঙ্কের পুত্র মানবাদিত্যের মৃত্যু বাংলাদেশকে পরাধীন করল। প্রাগজ্যোতিষপুর বা কামরূপের মহারাজ ভাস্কর বর্মা দখল নিয়েছেন এই বাংলার, ভাবতেই তীব্র রাগে গায়ে জ্বালা ধরল জয়নাগের। কিন্তু এখন আক্রমণ করার সময় নয়। মহারাজ মানবাদিতা মৃত্যুর আগে তার হাতে মহারাজ শশাঙ্কের তরবারি তুলে দিয়েছিলেন। কোথায় গেল সেটা? অন্ধকারে। হাতড়ে হাতড়ে সে তরবারি সংগ্রহ করল জয়নাগ। রাজবাড়ীতে বিজয় উল্লাসে তখন সৈনিকেরা মত্ত। এই সুযোগ। এখান থেকে পালাতে হবে। ধীরে ধীরে রণক্ষেত্র থেকে ক্লান্ত রক্তাক্ত জয়নাগ পিছিয়ে যেতে থাকল। রাজবাড়ীর দিকে তাকিয়ে প্রতিজ্ঞা করল আমি আবার আসব, ফিরে আসব।

কিন্তু কোথায় যাবে এখন জয়নাগ? রক্তপাতে দেহ দুর্বল। ক্ষুধা পিপাসায় একান্ত অবসন্ন শরীর। কিন্তু তাড়াতাড়ি চলার দরকার। বেশি দূরে চলে যাওয়ার উপায় নেই তার। নগর পতন হয়েছে মানে নগরীর উপকণ্ঠে নিকটবর্তী সব গ্রামে কামরূপী সেনারা দলে দলে ঘুরছে। জয়নাগের মাথায় রক্ত, পরিধেয় বস্ত্র রক্তে মাখামাখি। এখন শত্রুসেনার চোখে এই লালে লাল চেহারা একবার যদি পড়ে তাহলে কি আর রক্ষে থাকবে? ধরবে এবং কারাগারে নিক্ষেপ করবে। তারপর ভাস্কর বর্মার দরবারে হবে বিচার। শশাঙ্ক মহারাজের গুপ্তধনের হদিশ নেবার জন্য উৎপীড়ন ও বিড়ম্বনার আর শেষ থাকবে না।

প্রাণ নেবে ওরা এরকম আশঙ্কা নেই। হিন্দুরা সহজে বন্দী সৈনিকদের প্রাণদণ্ড করে না। তবে জয়নাগ সাধারণ সৈনিক ছিল না। সেনানী পর্যায়ের লোক এবং মহারাজ মানবাদিত্য তার প্রিয় বন্ধু ছিলেন এটা জানাজানি হয়ে গেলে বিপদ আছে। Rahasyabrito pdf

যাতে জানাজানি না হয় সেই চেষ্টাই এখন জয়নাগকে করতে হবে। তার জন্য প্রথমেই দরকার এই রাজতরবারিখানা লুকিয়ে ফেলা। সমস্যা হল এই তরবারি লুকোতে গেলে তা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। শত্রুসেনা চারিদিকে টহল দিচ্ছে। Rahasyabrito pdf

জয়নাগ তরবারিটার দিকে দেখল। তরবারির হাতলে খোদাই করা রয়েছে মহারাজ শশাঙ্কের নাম। আর তার সঙ্গে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যেটা মণিমাণিক্য খচিত এই হাতলের ভেতরেই খোদাই করা আছে, তা হল সাংকেতিক ভাষায় মহারাজ শশাঙ্কের ধন-ভান্ডারের ঠিকানা। যে ধন-ভান্ডার কোথায় তা জানতেন একমাত্র মহারাজ শশাঙ্ক এবং তারপরে তাঁর পুত্র মানবাদিত্য। সেই তরবারি হাতে ধরে বসে রইল জয়নাগ। সে যদি কখনো সেনাবাহিনী গঠন করতে পারে, যদি আবার উদ্ধার করতে পারে গৌড় তাহলে এই ধনসম্পত্তি সবই হবে তার। এর সাহায্যে আবার গড়ে তুলবে নতুন বাংলাকে।

হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে তবু লুকোতে হবে এ তরবারি। এটা কটিতে নিয়ে ঘোরাফেরা বিপজ্জনক আজকের দিনে। জয়নাগ চলতে লাগল অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে। শ্রান্ত পা টেনে টেনে যতটা সম্ভব নির্জন পথ বেছে চলতে লাগল। বহু যুদ্ধের সেনানী জয়নাগ পরাজিত সৈনিকের মতো পলায়ন করছে এটা ভাবলেই তার মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে ফিরে যাই খোলা তরবারি নিয়ে।

একবার ঝাঁপিয়ে পড়ি সৈনিকদের মধ্যে। যেখানে মহারাজ শশাঙ্কের রাজধানী শত্রুর পদানত সেখানেই নিজের প্রাণ দান করি। আবার কখনো মনে পড়ে যাচ্ছে মানবাদিত্যের কথা। এই তরবারি দিয়ে মানবাদিত্য তাঁর শেষ সময় বলেছিলেন, “এই তরবারির মান তুমি রেখো, এই রাজধানী তুমি উদ্ধার করো। এর হাতলে গুপ্তধনের সংকেত আছে তাই দিয়ে…” কথা শেষ করার আগে চিরকালের মত স্থির হয়ে গেছিলেন বাংলার মহারাজ মানবাদিত্য।

Rahasyabrito pdf – Saswata Dhar download link

Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply