শামসুদ্দীন নওয়াব এর শিশু-কিশোর রহস্য, গোয়েন্দা, ভৌতিক, থ্রিলার ও অ্যাডভেঞ্চার তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১২৭ pdf (অমঙ্গলের ছায়া, খুনি লাশ, ড্রাগনরাজার দেশে) Tin Goyenda Volume 127 pdf ডাউনলোড করু ও Tin Goyenda Volume 127 pdf পড়ুন।
Tin Goyenda Volume 127 pdf তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১২৭ pdf নমুনাঃ
নাহ্, ডনের জ্বালায় আর পারা যায় না, মনে মনে বলল কিশোর। বিছুটা ফ্ল্যাশলাইট নিভিয়ে শুতে না এলে মেজাজ ধরে রাখা কষ্টকর হবে ওর জন্য। পৌনে একটা বাজে। সামনে লম্বা রাত পড়ে আছে।
কিশোরের অন্ধকার বেডরূমে এখনও পপকর্ন আর নেইল পলিশের গন্ধ ভাসছে। ডন সন্ধেবেলায় কিশোরের কুকুর বাঘার নখে উজ্জ্বল গোলাপী পলিশ লাগিয়েছে। শুধু যে একটু পরপরই লাফ দিয়ে বিছানা ছেড়ে জানালার কাছে যাচ্ছে- আসছে ডন তাই-ই নয়, সারা ঘরে পপকর্ন ছড়িয়ে যা-তা কাও করেছে। ডন দুঃস্বপ্ন দেখেছে বলে ওকে নিজের কামরায় থাকতে দিয়েছে কিশোর। কিন্তু আর তো সহ্য হচ্ছে না। বিছুটা ওকে পাগল করে তুলছে।
এক কোনায় বাঘার বিছানা ও ওখান থেকে মৃদু গর্জন ছাড়ল।
‘তুমি বাঘাকেও বিরক্ত করছ, ডন। তোমাকে কয়বার বলব জানালা থেকে সরে এসো?’ দীর্ঘশ্বাস ফেলল কিশোর। পাজামা পরা ডনকে দেখে লাল-সবুজ মেক্সিকান জাম্পিং বিনের মত লাগছে। জানালার সঙ্গে সেঁটে থাকা ডন শ্বাস চাপল। একটা উচ্চা ৰসে পড়ছে। এখানে এসো। দেখে যাও।’
কিশোর মেজাজ ঠাণ্ডা রাখার জন্য শ্বাসের নীচে দশ পর্যন্ত গুনল । বাইরের আঁধারে যেই চোখ রেখেছে অমনি গাছ-পালার উপরে, আকাশে উজ্জ্বল কিছু একটা দেখতে পেল। আলোর জ্বলজ্বলে বিন্দুটা যেন মুহূর্তের জন্য ঝুলে থাকল বাতাসে, এবার এঁকেবেঁকে চলে গেল দিগন্তের দিকে, আরেকটা মুহূর্ত ভেসে থেকে চোখের আড়াল হয়ে গেল।
কাছের এক ব্যুরো থেকে কিশোরের ডিজিটাল ঘড়িটা ঝলসাতে শুরু করল।
‘আলোর জিনিসটা কোথায় গেল?’ প্রশ্ন করল ডন।
পাগলের মতন চোখ দিয়ে আকাশে তল্লাশী চালান কিশোর। ‘কোথায় ওটা?’ ডন আবারও জানতে চাইল।
‘কোন প্রেনের এপ্রিনে মনে হয় সমস্যা হয়েছে, জোর গলায় জ্ঞানাল কিশোর কিংবা উচ্চাও হতে পারে
“চলো না, কিশোর ভাই গিয়ে দেখে আসি।’
‘আমি কোন ক্র্যাশের শব্দ পাইনি। দেখার কিছু থাকলে তো যাব। “আমার মনে হয় না ওটা উচ্চা, জেনী কণ্ঠে বলে ডন।
বাঘা একবার ডাক ছেড়ে ওর বিছানা থেকে উঠল। জানালায় যোগ দিল ওদের সঙ্গে। লেজ সামনে-পিছনে নাড়ছে ক্রুদ্ধ ভঙ্গিতে। ‘তোর আবার কী হলো?’ প্রশ্ন করল কিশোর।
বাঘা ওদের দু’জনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে। প্রথমে কিশোরের তারপর ডনের মুখ চেটে দিল। এবার গোলাপী নেল পলিশমাখা একটা থাবা তুলে দিল জনালার শার্সির দিকে।
কিশোর এসময় লাল বিন্দুটাকে আবারও দেখতে পেল। গাছ- পালার সারির পিছনে খসে পড়ল এটা।
লম্বা লম্বা পাইন গাছের সারির পিছনে একটা মাঠ। ভুতুড়ে লাল-
কমলা আলোতে স্নান করছে।
পাজামা টপের হাতা দিয়ে জানালার শার্সি ঘষল কিশোর বাঘার জিডের আঠা মুছে দিল। ভাল মত দেখার জন্য জানালাটা খুলল ও। এক ঝলক ধোঁয়াটে বাতাস ওকে ধাক্কা মেরে পিছিয়ে দিল কয়েক কদম। ভন নাকে-মুখে দু’হাত চাপা দিল। বাঘা গরম বাতাসের ঝান্টায় ডেকে উঠে চোয়াল খুলল আর বন্ধ করল।
দূরের অত্যুজ্জ্বল আলোটার দিকে চোখ পিটপিট করে চাইল কিশোর। ধীরে ধীরে ক্ষীণ হয়ে আসছে ওটা। হিরু চাচার গরু আর ঘোড়াগুলো চারণভূমি থেকে প্রবল আপত্তি জানাল।
হিরু চাচাকে ডেকে আনো মৃদু কণ্ঠে বলল কিশোর। ‘না, আমার ভয় করে, নাকি সুরে বলল স্তন।
এবার জ্বলন্ত আলোটা নিভে গেল পুরোপুরি। হঠাৎই চারণভূমি আর লাগোয়া মাঠ ঢাকা পড়ল নিশ্ছিদ্র আঁধারে।
কিশোর জানালা দিয়ে মুখ বের করে দিয়ে আঁধারের ঘ্রাণ নিল । ধুলোর মেঘ ঢুকে গেল নাকে-মুখে। কাশতে কাশতে সরে এল ও। একটু সুস্থির হতেই দেখল বাঘা জানালা গলে বাইরে লাফিয়ে পড়েছে। ‘বাঘা চেঁচান কিশোর। ফিরে আয় বলছি। জানালা দিয়ে যতটা সম্ভব শরীর গলিয়ে দিয়ে চিৎকার ছাড়ল, বাঘা!
ঝটপট জিন্স পরে নিল ও। জানালা দিয়ে বেরিয়ে নেমে পড়ল মাটিতে। বাঘাকে যে করে হোক ফিরিয়ে আনবেই। বাঘা কুখ্যাত দৌড়বাজ। সুযোগ দিলে হরিণকে ধাওয়া দেবে আধ মাইল অবধি। কিশোরের পাশে ঘাসের উপর ধুপ করে একটা শব্দ হলো। গোশলাইট হাতে লাফিয়ে পড়েছে ডন। কিশোর ওর হাত থেকে ফ্ল্যাশলাইটটা ছিনিয়ে নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
বাসায় যাও, ডন। তুমি ছটফট না করলে বাঘা হারাত না আর আমাকেও এই রাতের আঁধারে ওকে খুঁজতে যেতে হত না।’
মিতিনমাসি সমগ্র অখণ্ড pdf – সুচিত্রা ভট্টাচার্য Mitinmasi Samagra all pdf – Suchitra Bhattacharya
ডন দু’বাহু তাঁজ কর কিশোর ভাই, তুমিই কিন্তু জানালাটা খুলেছিলে। এবার বনভূমির দিকে হাঁটা ধরল ডন। চু-চু শব্দ করে বাঘাকে ডাকছে ।
কিশোর আড়মোড়া ভাঙল, কাশল এবং মাথা তুলে আকাশের দিকে চেয়ে দাঁড়িয়ে রইল। পাইন গাছের ডাল-পালা ভেদ করে তারার ঝিকিমিকি দেখতে পাচ্ছে ও।
ডনকে ভালমানুষী করে নিজের ঘরে ঠাঁই না দিলে এখন আরামে ঘুমোতে পারত কিশোর। এই মাঝ রাতে ডন জার বাবার পিছনে ছুটতে হত না।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.