শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় এর উপন্যাস Agastya Jatra pdf অগস্ত্য যাত্রা pdf ডাউনলোড করুন ও Agastya Jatra pdf অগস্ত্য যাত্রা pdf পড়ুন।
Agastya Jatra pdf অগস্ত্য যাত্রা pdf নমুনাঃ
বিখ্যাত গ্রন্থকার আনন্দগোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্বর্ধনার দিনেই লাইব্রেরি উঠে গেল। বুকের রক্ত জল করে তিল তিল করে ওরা গড়ে তুলেছিল এই লাইব্রেরি। আনন্দগোপাল স্মৃতি • পাঠাগার। মাত্র দু’শো পোস্টার সারা শহরে ওরা মেরেছিল। তাতেই সব ভেস্তে গেল। আগবাড়িয়ে পোস্টার না মারলে আজ আর দেখতে হত না। আঃ গোঃ স্বঃ পাঠাগার এতদিনে চাই কি ডিস্ট্রিক্ট লাইব্রেরির মত বড় হয়ে যেত।
সাপ্তাহিক বর্তমান ২৬ মার্চ ২০২২ পিডিএফ Saptahik Bartaman 26 March 2022 pdf
অচিন্ত্যব তাই মত। অচিন্ত্যকুমার ঘোষ। ওরফে ক্যাপটেন স্মিথ। বিশিষ্ট গোয়েন্দা নৃপেন্দ্রনাথ দত্ত চৌধুরী ওরফে মিস্টার ব্লেকের সে সহকারী। আরও তিনজন সেদিন সেখানে ছিল। বিখ্যাত ম্যাজিসিয়ান প্রোফেসর আসফাকুল ইসলাম ও তার সাকরেদ পবিত্র হুই—যে-কিনা দরকারের সময় আসল কথা হারিয়ে ফেলবেই। • আর তোলাবে। এসব তো আমরা জানিই।
আসফাকুলকেও না চেনার কথা নয়। এ-শহরে তার ম্যাজিক দেখেনি কে? আর সেখানে ছিল হায়দার আলি। ব্লেড, কাচ, কালি বা মাটি—যে-কোন জিনিস খেয়ে ফেলতে পারে। দিব্যি হজম। খাবার পরদিন কোনরকম অসুবিধে হবে না।
সেখানে মানে—ভৈরবের তীরে। বড় মাঠ। সময় সন্ধ্যা। টাউন ক্লাব আর ইউনিয়ন স্পোটিং লিগ খেলে সবে বাড়ি ফিরেছে। সন্ধ্যার অন্ধকারে শাদা গোলপোস্ট হারিয়ে গেল। পিচুরাস্তা দিয়ে মাঝে মাঝে সাইকেল রিক্সা যাচ্ছিল। ডানদিকে কোর্টের লালবাড়ি এখন অন্ধকার।
রেল স্টেশন থেকে লম্বা পিচরাস্তাটা এসে পড়েছে ডাকবাংলোর মোড়ে। সেখান থেকে ছুটে গিয়ে শেষ হয়েছে রূপসার খেয়াঘাটে। তার এক পাশে আদালত, বড় মাঠ, ভৈরব নদী। অন্যদিকে জেলা স্কুল। মাঠের ওপারে মডেল স্কুল। সেখানে হেডস্যার নির্মল পাল বি-এ। তার পাশেই হৃদয়বাবুর প্রাইমারি স্কুল-পুকুর—গোলপাতার ঘর। তিনি একাই থাকেন। ওই পুকুরে একাই চান করেন। সাদা লম্বা দাড়ি চিরুনি দিয়ে আঁচড়ান। সেই চিরুনিতে মাথার. শাদা বাবড়িও আঁচড়ান। আর দেন বক্তৃতা। কোন সভা পেলেই হল। নেমন্তন্ন লাগে না।
জেলা স্কুলের ক্লাশ সেভেনের এই পাঁচজন এখন অন্ধকারের মধ্যে ডুবে বসেছিল। আসফাকুল বলল, বোধহয় অমাবস্যা। চাঁদ নেই কোন না?
অচিন্ত্য সেসব কথায় গেল না। আজ কতদিন হল রে— ‘পবিত্র বলল, তা-তা ধর গি-গিয়ে সাদ্দিন তো বটেই—তা-তাই
হায়দার বলল, হ্যাঁ সাদ্দিন হবে। আনন্দ আমাদের ভুলে গেছে বোধহয়।
এই প্রথম নৃপেন কথা বলল। সন্ধ্যে থেকে একবারও মুখ খোলেনি সে। যা সম্বর্ধনা আমরা আনন্দকে দিলাম! ভুলবে না তো কি?
এককথায় সবার চোখের সামনে সেই সম্বর্ধনা সভার চেহারাটা খানিকক্ষণের জন্যে ভেসে উঠল। যেসব বইয়ের দোকান থেকে চুরি করা বই এনে পাঠাগার হয়েছিল – সেইসব দোকানদার সম্বর্ধনা সভার ভেতরে দৌড়াদৌড়ি করছে। চট্টোপাধ্যায় অদাস। কেতাবিস্তান। গুপ্ত অ্যাণ্ড কোম্পানি। নৃপেন আর অচিন্ত্যকে ধরবে বলে। আর ছুটেছে গোষ্ঠবাবু। টাউনলাইব্রেরির লাইবেরিয়ান। তিনি তাঁর লাইব্রেরির বইচোর হায়দারকে দেখেই চিনতে পেরেছিলেন।
অচিন্ত্য দুঃখ করে বলল, কত কষ্ট করে একখানা দু’খানা করে বই এনে তবে আনন্দগোপাল স্মৃতি পাঠাগার হয়েছিল। নৃপেন বলল, আমি আর তুই কত কষ্ট করে দোকান থেকে একখানা দু’খানা করে বই হাত সাফাই করে চুরি করে এনে এনে সেই আনন্দই একদিনের জন্য এসে কোন আনন্দ পেল না। যার নামে পাঠাগার সে-ই চলে গেল। পালিয়ে যেতে হল একরকম। লাস্ট ট্রেনে কলকাতায় ফিরে গেল।
তাছাড়া কি। কত কষ্ট করে চারখানা একসারসাইজ বুকে উপন্যাস লিখে এনেছিল। ‘অমঙ্গলের মঙ্গল’। অত ভাল স্টুডেন্ট। অথচ আমাদের কত ভালবাসে। কোন গর্ব নেই। আমরা লিখে পাঠাতেই বই লিখে ফেলেছিল।
পবিত্র এই সময় হঠাৎ ‘নিঃ’ ‘নিঃ’ করতে শুরু করল।
তখন অচিন্ত্য বলল’ নিরহঙ্কারী !
পবিত্র ‘হু’ বলে থামল।
আজ পাঠাগার চালু থাকলে আনন্দের ‘অমঙ্গলের মঙ্গল’ উপন্যাসখানা তো আমরা ছাপতে দিতে পারতাম। নিজেদের লাইব্রেরী! নিজেদের বই!
, আসফাকুল আফসোসের সুরে বলল, নিজেদের বন্ধুর নামে পাঠাগার! এরকম কোথাও যার আছে?
ক’মাস আগে আনন্দর মামা কলকাতায় বদলি হয়ে যান। আনন্দ মামার কাছে থেকে ওদের সঙ্গে জেলা স্কুলে পড়ত। ইংলিশ সেকেণ্ড পেপারে আলি স্যারের হাতে ফিফটি-টু পেয়েছিল। অর্থাৎ হায়ার সেকেণ্ডারিতে গিয়ে নির্ঘাৎ আরও কুড়ি নম্বর বেশি পাবে। আলিস্যার খাতা দেখেন খুব স্টিফ করে।
এখন এ-লাইব্রেরির কথা সারা শহর জানে। মাত্র দুশো পোস্টার। সেই পোস্টারই কাল হল সবার। এখনো বোধহয় কোর্টের দেওয়ালে, রেল স্টেশনে দু’একখানা পাওয়া যাবে।
Agastya Jatra pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.