
শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় এর উপন্যাস Siddhokamini pdf সিদ্ধ কামিনী pdf ডাউনলোড করুন ও Siddhokamini pdf সিদ্ধ কামিনী pdf পড়ুন।

Siddhokamini pdf সিদ্ধ কামিনী pdf
আমার যখন সবে জ্ঞান হচ্ছে তখন জানলাম আমার বাবা একজন পরষ চটপটে মানষ। খাকির হাফপ্যান্টের ভেতর হাফশার্ট গজে পরে বাবা বট পায়ে টগবগ করে হেটে যেতো। আমি হয়তো তখন দ’ বছরের। দাদা সিক্সে পড়ে। আমার অন্য ভাইবোন তখনো জন্মায় নি। মা আমায় ঘটের মত সামনের বারান্দায় বসিয়ে রেখে গেছে, হাতে একখানা বিস্কুট দিয়ে কিংবা একটা বল। তখন দেখেছি বাবাকে। বারান্দা থেকে নেমে যাচ্ছে স্পিডে। চোখে লেগে থাকার মত সন্দের দেখতে।
পথের পাঁচালী pdf – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় Pother Pachali pdf – Bibhutibhushan Bandyopadhyay
বেশ বড় হয়ে দেখেছি, সন্দের হয়ে ওঠার জন্যে বাবার একটা তৃষ্ণা ছিল। পা থেকে মাথা অব্দি পাইনট করে সর্ষের তেল মেখে নিয়ে তবে পুকুরে নামতো। দ’ হাত ডানা করে জল কাটতো বাবা। পরে দেখেছি, সাঁতারের ইডিয়মে তারই নাম বাটারফ্লাই। মাথাটি বাবা যত্ন করে আচড়াতো। ভ্রু গোঁফ দ’জনই তার হাতের চিরনির স্বাদ পেতো।
এইসব দেখছি। ভুলে যাচ্ছি। মা আমায় সন্ধ্যে-রাতে আলো নিভিয়ে মশারির ভেতর ঠেলে দিতো কোন কোন দিন। যাতে বেশিক্ষণ ঘুমোই। আর আমি ঘুমোলে মা নাকি অনেক স্বস্তিতে কাজকর্ম সেরে ফেলতে পারতো। আমি কিন্তু মশারির ভেতর জেগে শহয়ে থাকতাম। অনেক দিন উঠেও বসে থেকেছি।
তখনি দেখতে পাই—অন্ধকার দ’ রকমের। একটা হল ফ্যাকাশে, একটু ছাই রঙের। অনাটা একদম কালো। গাঢ় কালো। অনেকখানি ফিকে অন্ধকারের ভেতর থেকে কালো অন্ধকার কিছুটা বেরিয়ে আসে। মশারির ভেতর জেগে শয়ে শয়ে এই গাঢ় অন্ধকারকে আমার দিকে এগিয়ে আসতে দেখেছি। ভয়ে কুকড়ে যেতাম। সে অন্ধকার এক একদিন কালো তেজি ঘোড়ার চেহারা নিত। সেদিন বারান্দার জ্যোৎস্না ঘিয়ে রঙের এক স্লাইজ আমলে বাটার হয়ে ঘরে মেঝেয় পড়ে থাকতো।
সেই মেঝেতে অন্ধকার দিয়ে তৈরি এই ঘোড়ার একখানা দাবনা ঘিরে হলদে জ্যোৎস্নার ভেতর পড়ে ঝিকঝিক করে উঠতো। দাঁড়ানো ঘোড়ার বাকিটা তখন ফ্যাকাশে অন্ধকারে মিশে আছে। আমি কিন্তু সবটাই দেখতে পেতাম। তেজী জন্তু হঠাৎ মাঠ থেকে গেরস্থ বাড়ি ঢুকে পড়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। ঘরের অন্য কিছুর সঙ্গেই তাকে মানায় না। দেড় দ’ হাত লম্বা মোটা গলা— ভেতর দিয়ে গলগল করে রক্ত বয়ে যাচ্ছে। আমি মাগ্ধ হয়ে সেই অন্ধকার ঘোড়াকে দেখতাম।
তখনই একদিন শুনলাম — কিংবা কিছঃ পরে শানে থাকবো- আমার বাবা একজন কনস্টেবল। গর্বে আমার বক ফুলে ওঠে। না, তখন আর আমি শিশ নই। আমি বালক হয়ে উঠছি। ঘুম থেকে উঠে ভোরবেলা মনে হয় – আমি নিজেই একটা টাট্ট, ঘোড়া। মফঃস্বল শহরের আম গাছতলা, ছায়া, দূরে কলকাতায় যাওয়ার হাইওয়ে দিয়ে অবলীলায় ছটতে পারি। দশ মাইল ছটেও হাঁপাবো না।
অদৃশ্য সংকেত pdf – স্বপন কুমার Adrishya Sanket pdf – Swapan Kumar
ও বয়সে কেউ সাহিত্য, শিল্প জানে না। জানে না স্বাস্থা বা বিজ্ঞান। জগৎটা তখন রূপকথার। তব বুঝতে পারতাম — মাত্র কয়েক বছর হল আমি একটা জীবন শর, করেছি। এই জীবন জিনিসটা অনেক দূরে যায়। তার প্রমাণ— পাড়ার বয়স্ক মান, ষজন। অনেক দূরে যেতে যেতে পথে এক দিন চুলে পাক ধরে। দাঁত নড়ে। দোখে চশমা না দিলে দেখা যায় না। খিদে কমে আসে। তার পর মরে যেতে হয়। এ শিক্ষা বালক মাত্রেই আশপাশে তাকিয়ে থাকতে থাকতে পেয়ে যায়। আমিও পেয়েছিলাম।
বুঝতে পারছিলাম—একটা সন্দের জিনিসের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। সেই জিনিসের নাম নবীন জীবন। বাড়ির উঠোনে স্থলপদ্ম ফোটে। পকুরে বড় রই বড়বড়ি কাটে। ভাঙা জিওল ডালের গা দিয়ে আঠা গড়ায়। ব্লটিং পেপারে কালি ওঠার মতই জীবনে পৃথিবীর রস উঠে আসছিল। দেখতে পাচ্ছিলাম। টেরও পাচ্ছিলাম। শধে, এত পরিষ্কার ভাষায় তখন বলতে শিখি নি। নইলে বুঝতাম সবই। একটা বড় ধর্ম দিয়ে উঠে সন্ধ্যের মুখে শিউলি গাছতলায় চড়াই পাখিদের ধূলোস্নান দেখতাম। জ্যোৎস্না ফুটিয়ে তুলতে আকাশ কালো হয়ে আসতো। তার পরেই সারা আকাশ মাতিয়ে হ্যাজাকের ম্যানটেল মার্কা সাদা একখানা থালা। লোকালয় জড়ে হলদে আলো গড়িয়ে দেওয়া। তখনই বঝেতাম – এই দশাটা বানানোর জন্যে সারাদিন ধরে চেষ্টা চলেছে। যেমন করে একটি ফুল সারারাত ধরে কুংড়ির দশা হনে করে ভোরবেলা ফুটে ওঠে।
আমি টের পাচ্ছিলাম আমার শরীরে হাত পা ছাড়াও একটি বিশেষ অঙ্গ আছে।
তা এই সব দৃশ্য এবং অভিজ্ঞতার ভেতর একটু একটু করে আগাম সব টের পায়। সেই জন্যে কখনো ছোট থাকে কখনো বড় হয়ে যায়।
অনেক পরে যখন পরোপরি খারাপ হয়ে যেতে থাকলাম—তখন এই যোগাযোগটা আমি অঙ্কের মত বঝতে পারতাম। ততদিনে বাবা আই. বি-র ইনফরমার। চেহারা খারাপ হয়ে গেছে। একটু ঝুকে পড়ে ধীর চালে সাইকেল চালাতেন আর সারা শহরের খবর যোগাড় করতেন। মা জানতেন। কিন্তু ঘরে বসে তক্তিতে টিপে নানা রকমের সন্দেশ বানাতেন শধু।
Siddhokamini pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.