
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় এর ভারতচন্দ্রের জীবননির্ভর উপন্যাস Amabasyar Gan pdf অমাবস্যার গান pdf ডাউনওলাড করুন ও Amabasyar Gan pdf পড়ুন।

Amabasyar Gan pdf নমুনাঃ
পুরী থেকে বৈষ্ণবের দল চলেছে বৃন্দাবনের পথে। মহাপ্রভুর নির্বাণ তীর্থ থেকে রাধাকৃষ্ণের লীলাভূমি ব্রজধামে। সাক্ষীগোপালকে প্রণাম করে, বর্গীর অধিকারের সীমা পার হয়ে, কুলীন গ্রামের পরম ভক্ত মালাধর বসুর অঙ্গনে সংকীর্তন করে, খানাকুল-কৃষ্ণনগরে।
সারাদিনে অনেকখানি পথ পার হয়েছেন বৈষ্ণবেরা। সন্ধ্যার মুখে যখন খানাকুলে পৌঁছলেন, তখন পা আর কারো চলতে চায় না।
‘জয় গৌরাঙ্গ! আজ এখানেই বিশ্রাম নিতে হবে।”
দলের নেতা বৃদ্ধ বৈষ্ণব যে জায়গাটিতে এসে দাঁড়ালেন, সেটি মনোরম। সামনে দীঘির জলে সূর্যাস্তের রঙ। বসন্তের হাওয়ায় চার পাশের গাছপালায় মাতন জেগেছে। কোকিল ডাকছে, বাতাসে নিম-মঞ্জরীর গন্ধ।
দলের নেতা মোহান্ত আবার বললেন, ‘নিমফলের গন্ধ আসছে। এই নিব বৃক্ষের মলেই তো আবির্ভাব হয়েছিল মহাপ্রভুর।’—উদ্দেশ্যে হাত জোড় করে প্রণাম করলেন, তারপর বললেন, ‘রাতটা এই দীঘির পাড়েই চমৎকার কেটে যাবে। আজ শক্লপক্ষ, চাঁদ উঠবে একট, পরেই। আকাশে মেঘ-বৃষ্টিরও কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। এসো, বসে পড়ো সবাই।’
সবাই বসে পড়ল ঠিকই আর নিমফলের গন্ধে মেশানো বসন্তের হাওয়াও নেহাৎ মন্দ লাগছিল না। কিন্তু জনকয়েক একটা পরেই উসখসে করতে লাগল। শেষ পর্যন্ত একজন আর থাকতে না পেরে বললে, ‘প্রভু!’
মোহান্ত গুনগুন করছিলেন, ‘জয় নিত্যানন্দ, জয় শ্রীঅদ্বৈতচন্দ্র’— তাঁর ঘোর লেগেছিল। বাধা পেয়ে ফিরে তাকালেন। বললেন, ‘আবার কী হল ?” ‘পথ চলে সবাই ক্লান্ত, খিদে-তেষ্টাও পেয়েছে—’
মোহান্ত বাবাজী বললেন, ‘সঙ্গে চিড়ে-মড়কী আছে, সামনে টলটলে স্নিগ্ধ জল রয়েছে—শ্রীকৃষ্ণের কৃপায় কিছুরই অপ্রতুল নেই। বেশ তো, সেবাটা সেরেই নেওয়া যাক না।’
বৈষ্ণবটি বয়সে ছেলেমানুষ, খিদেটাও একটু বেশি। করজোড়ে বললে, ‘প্রভু, চিড়ে-মাড়ি যা আছে তা সামান্যই। তাতে কারো ভালো করে পেট ভরবে।
অক্রোধী মোহান্তও একট, বিরক্ত হলেন। একটা খপ্পনী তুলে নিয়ে বার কয়েক ঝঙ্কার দিয়ে বললেন, ‘পেটপুজো তো আর আসল কথা নয়—আমরা শ্রীবৃন্দাবনে তীর্থ করতে চলেছি। এ-টুকু আত্মনিগ্রহও যদি করতে পারবে না, তা হলে এ পথে এলে কেন?” Amabasyar Gan pdf পড়ুন।
ছেলেমানুষে বৈষ্ণবটি মাথা নিচু করে বসে রইল।
একশ বছরের সেরা হাসি pdf – অরুণ মুখোপাধ্যায় Eksho Bacharer Sera Hashi pdf : Arun Mukhapaddhay
মোহান্ত আবার বললেন, ‘প্রভুপাদ শ্রীসনাতন গোস্বামী যখন রাজপদ ছেড়ে দীনাতিদীন হয়ে নীলাচলে গিয়েছিলেন, মনে আছে তাঁর সেই কৃচ্ছ সাধন ? আধখানা হরিতকী সঞ্চয় রেখেছিলেন বলে সঙ্গের ভৃত্যটিকে পর্যন্ত তাড়িয়ে দিলেন।
একটা দূরে ঘাসের ওপর পাটলি মাথায় দিয়ে দাড়িগোঁফওলা একজন বৈষ্ণব চিৎ হয়ে শয়েছিলেন, আকাশের তারা গুণছিলেন খুব সম্ভব। তাঁর পাশেই মাঝবয়েসী রোগা চেহারার একটি লোক বসে জলন্ত দৃষ্টিতে লক্ষ্য করছিল মোহান্তকে। বেশ বোঝা যাচ্ছিল, মোহান্তের বাণী তার আদৌ পছন্দ হচ্ছে না। লোকটি লম্বমান শ্মশ্রল গোসাইটির ব্যক্তিগত ভৃত্য, গৌরবে খাস শিষ্য।
সে গোসাঁইকে আস্তে একটা খোঁচা দিয়ে বললে, ‘কর্তা, শুনছেন?” গোসাঁই ভ্রুকুটি করে বললেন, ‘আবার কর্তা? তোকে লক্ষবার বলিনি, আমি বৈষ্ণব সন্ন্যাসী? হয় প্রভু বলবি নইলে গোসাঁইজী বলবি।’
‘এজ্ঞে, মনে থাকে না। আপনি না হয় হঠাৎ গোসাঁই হতে পারেন, কিন্তু আমার এতদিনের অভ্যাসটা চট করে যায় কেমন করে? তা ছাড়া চৌদ্দপুরুষ যার শাক্ত—তার এখন মালসাভোগ আর নামকেত্তন-‘
‘চোপ’—বলে দাড়িওয়ালা গোসাই পাশ ফিরলেন।
গোঁসাইবাগানের ভূত pdf – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় Goshai Baganer Bhoot pdf – Shirshendu Mukhopadhyay
‘ইদিকে কণ্ঠী ধরেছ, ওদিকে শান্তের বদমেজাজটি তো যায়নি।’ ‘আমাকে এখন জালাসীন রঘু, শরীর ভালো নেই।’
‘শরীর ভালো না থাকার এখুনি হয়েছে কি! ওদিকে মোহান্ত বাবাজীর ফতোয়া শনছেন না? রাত্তিরের জন্যে হর্তুকীর ব্যবস্থা হচ্ছে যে!”
গোসাঁই হাসলেন এবার। বললেন, ‘ক্ষতি কী! হতুকীর মতো উৎকৃষ্ট জিনিস কি কিছু আছে? কবিরাজী শাস্ত্রে কী বলে তা জানিস? কদাচিৎ কুপিতা মাতা—ন কুপিতা হরিতকী—’
রঘু, অর্থাৎ রঘুনাথ এবার চটে উঠল। বললে, ‘থামন কর্তা থামান।’ ‘আবার কর্তা?”
‘হ্যাঁ, একশোবার কর্তা। জানি আপনি মস্ত পণ্ডিত, ফার্সী-সংকেত সব পড়ে ফেলেছেন, তাই বলে নাপিতের বাচ্চা রঘুকে এত সহজে ফাঁকি দিতে পারবেন না। খালি পেটে হর্তুকী? ভেবেছেন কী ? ‘
দাড়িতে হাত বুলোতে বুলোতে গোসাঁই বললেন, ‘তোকে তো হাজারবার বলেছি রঘু, তুই আমার সঙ্গে থেকে কষ্ট পাসনি, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যা। বৈরাগ-যোগ ভারী শক্ত জিনিস রে সবাই কি আর পারে ?”
‘আপনি পেরেছেন বুঝি ?’
‘চোপরাও। তোর তো বড্ড মুখে বেড়েছে।’
‘আহা, কী আমার বোষ্টম রে! যেন মা-কালীর মতো খাঁড়া উপচিয়েই রয়েছেন!’
Amabasyar Gan pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.