অন্য দ্বীপ pdf – নবনীতা দেবসেন Anya Dweep pdf – Nabaneeta Dev Sen

নবনীতা দেবসেনের Anya Dweep pdf অন্য দ্বীপ pdf ডাউনলোড করুন ও Anya Dweep pdf পড়ুন।

অন্য দ্বীপ pdf - নবনীতা দেবসেন Anya Dweep pdf - Nabaneeta Dev Sen
অন্য দ্বীপ pdf – নবনীতা দেবসেন Anya Dweep pdf – Nabaneeta Dev Sen

Anya Dweep pdf অন্য দ্বীপ pdf নমুনাঃ

সাপের মতো না, শুঁয়োপোকার মতো না, রেলগাড়ির মতোও না। কিসের মতো যে এই দীর্ঘ মনুষ্যরেখা, ভেবে পাচ্ছি না। নড়ছে, চলছে, জ্যান্ত। অগুন্তি জীবন্ত টুকরোর সমাহারে একটা গোটা জিনিস আকৃতি পেয়েছে। তার একটা গতি আছে, লক্ষ্য আছে, একটা সামগ্রিক প্রাণ আছে। মিছিল নয়, কিউ। শয়ে শয়ে মানুষ ফিফটি সেকেণ্ড স্ট্রীট থেকে ফিফটি থার্ড পর্যন্ত ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে, প্রায় পুরো ব্লকটা প্রদক্ষিণ করে। পূবদিকে ফিফথ অ্যাভিনিউ, নিউ ইয়র্কের সব চেয়ে ফ্যাশনেবল মাঝখানে জগন্নাথ মন্দিরের মতো শোভা পাচ্ছে ভক্ত পরিবৃত “মিউজিয়াম অব্ মডার্ন আর্ট’।

জগ​ৎ শেঠের রত্নকুঠী pdf – হেমেন্দ্রকুমার রায় Jagat Sether Ratnakuthi pdf – Hemendra Kumar Ray

সকলের হাতেই টিকিট। বাঁধাধরা সময় মাফিক এক-একটা দলকে ঢুকতে দিচ্ছে। থিয়েটার এজেন্টদের কাছে তিন হপ্তা আগে থেকে কিনতে হচ্ছে এই টিকিট। বুধবার, অর্থাৎ আজকে, অবশ্য মেম্বার্স ডে। মেম্বার্স কার্ড হোলডার্স নলি! এ কি সোজা ব্যাপার? ‘টাইম’ ম্যাগাজিন বলেছে এটা আমেরিকার কালচারাল ইভেন্ট অফ দি ইয়ার নাইনটিন এইট্টি। পিকাসো রেট্রসপেকটিভ একজিবিশন। নিউইয়র্কের জনপ্রিয়তম ঘটনা। চট্‌ ক’রে নিজের পোশাক-আশাকের দিকে এক নজর দেখে নিই। যাক্ শাড়ির মতো ফ্যাশনেবল পোশাক আর ত্রিভুবনে নেই। তায় দক্ষিণী সিল্ক। ইচ্ছে ক’রেই শার্ট পেন্টুলুন প’রে আসিনি আজ। সেজেগুজে যেতে হবে না? এতো বড় একটা ব্যাপারে যাচ্ছি! কতো না রুচিমান মানুষের ভিড় সেখানে! কিউতে দাঁড়িয়েই অবশ্য বুঝে গেছি, সকলেই যে শিল্প-পাগল তা নয়। অনেকেই এসেছে, হুজুগে মেতে। অনেকে আবার একদমই শিল্প বোঝে না। সেটা জানা গেল ভেতরে ঢুকে।

একটা শিল্পপ্রদর্শনী নিয়ে সারা শহর উন্মত্ত হ’য়ে রয়েছে এ ঘটনা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হয় না। ঠিক এখনই লণ্ডনের টেট গ্যালারিতে চলেছে সালভাদর দালির প্রথম রেট্রসপেকটিভ প্রদর্শনী। তাতে লণ্ডন তো এমন মেতে ওঠেনি? বিনা কিউতেই টিকিট কেটে দিব্যি ঢুকেছিলাম। ঈশ, পিকাসো বেঁচে থাকতে থাকতে কেন যে হ’লো না এটা? কতো আহ্লাদ পেতেন, যা একটি প্রচণ্ড ইগো ছিল! খুবই সুখী হতেন, আনন্দে নেচে নিতেন ছ-পাক!

পথে যেন মেলা বসেছে। একপাশে ঠেলা গাড়িতে কাগজে মোড়া হ্যামবার্গার হট্‌গ বিক্রি হচ্ছে। চমৎকার গন্ধ বেরুচ্ছে ভাজা পেঁয়াজের আরেক ঠেলায় নানা ধরনের সত্যি ঠাণ্ডা কোল্ড ড্রিঙ্ক। আমাদের দুর্লভ ধন ‘কোকাকোলার’ ছড়াছড়ি। আরেক ঠেলাওঙ্গা বেচছে আইসক্রীম। সবাই ‘মুখর’, কিছু না কিছু খাচ্ছে, চুষছে, চাটছে, চিবোচ্ছে, চুমুক দিচ্ছে। দিব্যি ফ্রয়েড সায়েবের মনের মতো প্রামাণ্য দৃশ্য।

আরজ আলী সমীপে pdf – আরিফ আজাদ Aroj Ali Somipe pdf – Arif Azad

আইসক্রীম-কোণ চাটতে চাটতে সামনের মহিলা তাঁর সঙ্গিনীকে বললেন, বাপরে, কী বীভৎস গরম পড়েছে এ বছর। কাল রাত্রের নিউজ দেখলে ? সঙ্গিনী বললেন, হ্যাঁ, ঈশ । সর্বনাশা গ্রীষ্ম ! সাতশো লোক মারা গেছে সাউথে।
এমন কিছুই রোদ নয়।
এখানেও মরবে এবারে। রোদটা দেখেছো?
কালকের টি ভি নিউজ আমিও দেখেছি।

সাউথে সাতশোজন হাঁট-স্ট্রোকে মরেছেন। মানুষের মৃত্যু নিশ্চয়ই খুবই শোকাবহ ঘটনা। সাতশো মানুষ, সংখ্যাটাও কম নয়, কিন্তু কেন জানি না আমার যথেষ্ট দুঃখ হয় নি। ভারতবর্ষের মানুষ আমি, সেদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাতশে৷ প্ৰাণ নষ্ট, তো ডাল-ভাত ! এই মহিলাদের হাহাকার শুনেও তেমন সহানুভূতি হ’লো না আমার। বরং কেমন একটা রাগই চ’ড়ে গেল মাথায়। কিছু এমন একটা দুর্দান্ত গরম নয়। দুর্গাপুরে হামেশা একশো দশ থেকে আঠারো হচ্ছে, গয়ায় একশো কুড়ি, এখানে একশো ডিগ্রি হ’তে-না-হ’তে মানুষ ঝপাঝপ মরছে। সুখের শরীর সব। জল-টল তো খাবে না, কেবল দুধ, বিয়ার, হুইস্কি, বার্বন খাবে। সব্জী খাবে না, কিলো কিলো গরু শুয়োর খাবে, মরবে না?

টাকাকড়ির অভাব নেই যাদের, তারা ঠাণ্ডা-গরমে মরবে! দেশটা যখন যথেষ্ট গরম, তখন তার যোগ্য ব্যবস্থ। করলেই হয়? শীতের বিরুদ্ধে তো এতোরকম অস্ত্রশস্ত্র, অথচ গরমের জন্য পাখা পর্যন্ত নেই! গরম পড়লে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা খাবার খাবে তো? বেশি ক’রে জল খাবে তো? নুন খাবে তো? এতো সায়েন্টিফিক লিভিং তোদের, গরমের সময় কি করতে হবে ঠাউরে উঠতে পারিস না? এমন চমৎকার মাস্ মিডিয়া রেডি রয়েছে—ডাক্তাররা প্রচার ক’রে দিলেই পারে কী কী উপায়ে গরমের সঙ্গে যুঝতে হবে। এদেশে মানুষ তো মোটে মরেই না, খুনীর হাতে, ক্যানসারে আর মোটর অ্যাকসিডেন্ট ছাড়া। এতো বড় একটা দেশে কতো কোটি মানুষ—সাতশো জন সুণী লোক না হয় আশাতীত গরমে ম’রেই গেছে! কী বাড়াবাড়িই না হচ্ছে তাই নিয়ে। দূর দূর, আমাদের কাছে এটা আবার একটা নতুন ঘটনা নাকি।

আমাদের দেশে অনন তো প্রত্যেক বছরে হচ্ছে। এই সেদিন কোলিয়ারিতে জলে ডুবেই মরলো সাড়ে চারশো শ্রমিক। সর্দি-গর্নিতে মরছে, শীতের দাপটে মরছে, বন্যায় ভেসে মরছে, না খেতে পেয়ে শুকিয়ে মরছে। মরার আর উপায়ের অভাব কিসের? সাপে-বারে কেটে মরছে, ডাক্তারের অভাবে মরছে, ডাক্তারের অ-যত্নে মরছে, চাকরি করতে না পেরে মরছে, পণ দিতে না পেরে মরছে, পুলিসের গুলিতে মরছে, গুণ্ডার বোমাতে মরছে, মনের দুঃখে মরছে। তাতে এদের তো কিছু এসে যায় না? পৃথিবীতে সায়েব মরলেই কেবল শোকের বান ডেকে যায়, কেবল ওদেরই প্রাণের দাম আছে। তাহলে সাহেবরাই শুধু মানুষ?

Anya Dweep pdf download link
Download / Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply