স্বপ্নময় চক্রবর্তীর Chotushpathi pdf চতুষ্পাঠী pdf ডাউনলোড করুন ও স্বপ্নময় চক্রবর্তীর Chotushpathi pdf চতুষ্পাঠী pdf পড়ুন।
Chotushpathi pdf চতুষ্পাঠী pdf
দেশভাগ-পরবর্তী আশ্রয়চ্যুত এক সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত অনঙ্গমোহনের জীবনসংগ্রামই নয় শুধু, তাঁর আদর্শ এবং ধর্মসংকটও বিশ্লেষিত হয়েছে এই বন্দিত আখ্যানে। একটি নির্দিষ্ট ভাষার সঙ্গে কোনো ধর্মের সম্পর্ককে অস্বীকার করেছেন অনঙ্গমোহন, সেই সঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র বিষয়েও। বিদগ্ধ মহল মনে করেন বাংলা ভাষায় এ যাবত প্রকাশিত শ্রেষ্ঠ একশোটি উপন্যাসের মধ্যে চতুষ্পাঠী অবশ্যই রয়েছে।
Chotushpathi pdf লেখকঃ
স্বপ্নময় চক্রবর্তীর জন্ম ১৯৫২, কলকাতায়। স্কুল-কলেজে বিজ্ঞানের ছাত্র। পরে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম. এ.। দেশলাই-এর সেলম্যান হিসেবে কর্মজীবন শুরু। নানা জীবিকা বদলের পর বর্তমানে আকাশবাণীর সঙ্গে যুক্ত। সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে লেখালেখির শুরু। প্রথম গল্প ‘অমৃত’ পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও ছোট পত্র-পত্রিকাতেই লিখেছেন বেশি। প্রথম গল্প সংকলন ‘ভূমিসূত্র’ (১৯৮২)। প্রথম উপন্যাস ‘চতুষ্পাঠী’ প্রকাশিত হয় আনন্দবাজার পূজা সংখ্যায় (১৯৯২)। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিশিষ্ট লেখকরূপে চিহ্নিত হয়েছিলেন।
চক্র pdf – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় Chokro pdf – Shirshendu Mukhopadhyay
দ্বিশতাধিক ছোট গল্প ও একাধিক উপন্যাসের লেখক স্বপ্নময় তাঁর ‘অবস্তীনগর’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন বঙ্কিম পুরস্কার (২০০৫)। এছাড়াও পেয়েছেন মানিক স্মৃতি পুরস্কার, তারাশঙ্কর স্মৃতি পুরস্কার, গল্পমেলা, ভারতব্যাস, আনন্দ-স্নোসেম ইত্যাদি পুরস্কার। লেখালেখি ছাড়াও গণবিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।
Chotushpathi pdf নমুনাঃ
বিলু মাঝে মাঝেই ভাবত, এখনও ভাবে, এইমাত্র যেমন ভাবল ওর বাবার মৃত্যুর জন্য ও নিজেই দায়ী। বাবাকে খাইয়েছে ও বিষ সন্দেশ। যে বাড়িতে বিলুরা থাকে, সেই বাড়িটা অন্তত দেড়শো বছরের পুরনো। খোপে খোপে গোলা পায়রারা থাকে, গলা ফুলিয়ে বকম বকম করে। রাস্তা থেকে সিঁড়ি উঠে গেছে দোতলায়। আঠাশটা সিঁড়ি। প্রথম দশটা সিঁড়ির পর একটা বাঁক, তারপর সিঁড়ি, আবার দশটা। সিঁড়ির বাঁকগুলোতে সিঁড়িটা কিছুটা চওড়া হয়, ওখানে কয়লার ড্রাম রাখা নিয়ে শিখার মায়ের সঙ্গে বিলুর মায়ের কী ঝগড়া। বেশ করেছি রাখব। আমরা বিনা ভাড়ায় থাকি নাকি, আমরা সবাই ভাড়া দি। জানা আছে জানা আছে তিন মাসের ভাড়া কার বাকি… এই রকম কথাবার্তা হয় ঝগড়া হলে। এখন সিঁড়ির দুটো বাঁকে দুটো কয়লার ড্রাম।
পাপ আদি থেকে অনন্ত pdf – সৌরভ চক্রবর্তী Paap pdf Adi Theke Ananta – Sourav Chakraborty
বিলুদের আর শিখাদের। শিখাদের সঙ্গে কথা বন্ধ ছিল অনেকদিন শিখার বাবা গান জানেন। হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান গাইতে পারেন। শাড়ি পরা মেয়েরা এসে গান শিখে যায়। ওরা খবর কাগজ রাখে। যখন ঝগড়া ছিল না তখন বিলু ওদের ঘরে গিয়ে মাঝে মাঝে খবর কাগজ পড়ে আসত; নেহরুর পর কে? পাকিস্তান হইতে পুনরায় উদ্বাস্তু আগমন। নেতাজি জীবিত আছেন। ফুল আপনার ভাগ্য বলিয়া দিবে। শিখার বাবা খুব নেতাজি ভক্ত ছিলেন। বলতেন শৌলমারীর সাধুই নেতাজি। নেতাজি যখন আত্মপ্রকাশ করবেন তখন জওহরলাল গদি ছেড়ে পালাবে। শিখার বাবা নেতাজির জন্মদিনে বারান্দায় নেতাজির ছবি একটা চেয়ারে বসিয়ে মালা দিতেন, ধূপ জ্বালাতেন আর বেলা বারোটা নাগাদ শাঁখ বাজাতেন।
গাঁদা ফুলের ঝিরিঝিরি পাপড়ি দিয়ে লিখতেন জয়তু নেতাজি। তেইশে জানুয়ারির দুপুরে শাঁখ বাজানো হলে শিখার বাবা ছাত্রীদের নিয়ে গাইতেন—কতকাল আর কতকাল বল মা… ভারতের বীর ছেলে / নেতাজীকে বিদায় দিলে/মা গো বল কবে শীতল হবে…। মরুতীর্থ হিংলাজের ‘পথের ক্লান্তি ভুলে’ গানটির সুরে গাইতেন শিখার বাবা। শিখা আর বিজুও গাইত। ঐ গানটারই এক জায়গায় ছিল চীনের এই আক্রমণে/দেশমাতার ব্যথা মনে/তুমি এসে ভারতের কালিমা ঘুচাও।
শিখার বাবা খুব সুখী লোক ছিলেন। অফিসে যাবার সময় শিখার মা দুগ্গা দুগ্গা বলে একটা পান গুঁজে দিতেন হাতে। তখন শিখার বাবা পানটা মুখে দেবার আগে এমন করে হাসতেন যেন টাইম কলে জল এল। একদিন সিঁড়ির বাঁকটায়, যেখানে কয়লার ড্রাম ঐখানে চুমু খেতে দেখেছিল বিলু, বিলুর হাতে তখন ঘুড়ি। মুখপোড়া ঘুড়ি। বিলু দ্রুত উঠে গিয়েছিল উপরে। শিখার মায়ের চাপা গলায় বিলু ‘মুখপোড়া’ কথাটা শুনেছিল। ওটা ঘুড়িকে বলেছিল না বিলুকেই, এখনো জানে না বিলু। একদিন মনে হচ্ছে, সেই অফিসে যাবার সময়, শিখার বাবা বলেছিল, ‘যাই’, শিখার মা বলল – যাই বলতে নেই, ‘আসি’। শিখার বাবা তখন কি সুন্দর গেয়ে উঠল, সখী যাই যাই বলো না। বিলু তখন কলঘরে একা।
শিখারা খুব সুখী। ওদের বাবাও খুব সুখী। এখানে ওরা দুটো ঘর নিয়ে থাকে। ওখানে ওদের একটা দেশ আছে। দেশ থেকে পেয়ারা আসে, আমসত্ত্ব, জয়নগরের মোয়া। ছুটিতে ওরা দেশে যায়। জয়নগর মজিলপুর। বিলুদের কোনো দেশের বাড়ি নেই। বিলুর ঠাকুরদা দেশ ছেড়ে চলে এসেছিল। শিখাদের দেশ আছে। দেশের বাড়ি। শিখার বাবার গলায় গান ছিল। শিখার বাবা গান গাইত, শিখা বিজুরাও ওদের বাবার কাছে গান শিখত। ‘ওরে আর দেরি নয় ধরগো তোরা’, ‘আগুনের পরশমণি’, তারপর, *এই মণিহার আমার নাহি সাজে- এইসব।
বিলুর দিদি স্বপ্নাও কয়েকটা গান শিখে নিয়েছিল। স্বপ্না যদি গাইত, শিখা বলত, লজ্জা করে না আমাদের গান গাইছিস… স্বপ্নাও ওর দাদুকে নালিশ করলে অনঙ্গমোহন বলতেন রবিবাবুর গান গাও ক্যান? ডি এল রায় গাইবা, হেমচন্দ্র-নবীন সেন গাইবা। আর বিলুর মা বলত- রবীন্দ্রনাথ কারোর বাপের নাকি? রবীন্দ্রনাথ সবার।
বিলুর বাবার এমন কোনো জুতো ছিল না, যা পরে হাঁটলে মসমস শব্দ হয়। শিখার বাবার ছিল পাম্পসু জুতো, মোকাসিন জুতো। বিলুর বাবার ছিল নিরীহ চটি। একবার বিলুর বাবা একজোড়া চটি নিয়ে এসে বললেন দেখ, দেখ, কেমন অদ্ভুত এক চটি। সর্বদা কেমন গদির উপর দিয়া হাঁটতাছি। বিলু পরে নাম জেনেছিল হাওয়াই চটি। আর যে প্যাকেটে চটিটা এনেছিল বিলুর বাবা, সেই প্যাকেটটাও ছিল অদ্ভুত। পাতলা ফিনফিনে, কাগজও নয়, আবার কাপড়ও নয়। ভিতরে জিনিস রাখলে কি সুন্দর দেখা যায়, আবার জলও ঢোকে না। বিলু নিতে চেয়েছিল ওটা, ওর বাবা দেয়নি। ওর বাবা টিফিনের বাক্স ওটা দিয়ে মুড়ে নিয়ে যাবে।
Chotushpathi pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.