শিশির বিশ্বাস এর Janaigarer Jungle Rahasso pdf জনাইগড়ের জঙ্গল রহস্য pdf ডাউনলোড করুন ও Janaigarer Jungle Rahasso pdf জনাইগড়ের জঙ্গল রহস্য pdf পড়ুন।
Janaigarer Jungle Rahasso pdf জনাইগড়ের জঙ্গল রহস্য pdf সূচি
জনাইগড়ের জঙ্গল রহস্য
খুদে গোয়েন্দা
বিষ্ণুচটির গড়ুরবাবা
সাধুচরণের সাগর পাড়ি
চক্রধরবাবুর চৈতন্যোদয় অর্জুন সর্দার
দুটো বাঘের বাচ্চাও ছিল
অস্ত্র ছিল হাতের কাছেই
Janaigarer Jungle Rahasso pdf নমুনাঃ
এক দিকে গঙ্গা। অন্য দিকে পাহাড় আর জঙ্গল। মাঝে সরু এক পায়ে চলা পথ। কিছু দূর যাবার পরে নতুন একটা রাস্তা বাঁ-দিকে চলে গেছে। মণিকাকু একদিন বেড়াতে নিয়ে এসেছিলেন এদিকে। বাঁ-দিকের রাস্তাটা সযত্নে এড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সৌম্য জিজ্ঞাসা করতে চোখ বড়ো করে সন্তর্পণে বলেছিলেন, “ওদিকে জনাইগড়ের জঙ্গল এলাকা। যায় না কেউ।’
শেষ বিকেলে সূর্য তখন দিগন্তের ওপারে। নদীর বুকে লাল আভা মরে এসেছে অনেকটা। মণিকাকু দেরি না করে বলেছিলেন, ‘সন্ধ্যে হয়ে আসছে। ফিরতে হবে এবার।
এর আগে অনেক জায়গাতেই বেড়াতে গেছে সৌম্য। কিন্তু এমন চমৎকার প্রাকৃতিক পরিবেশ বেশি পায়নি। ট্রেনে সাহেবগঞ্জ পৌঁছে আসতে হয় এই জনাইগড়। মণিকাকু এখানে পি.ডব্লিউ.ডি.-র ইঞ্জিনিয়ার। মাস কয়েক হল পোস্টিং পেয়েছেন। মণিকাকু অবশ্য এসবের কিছুই বাড়িতে ভাঙেনি। সন্দেহ নেই, সৌম্যর কথা ভেবেই। তবে যেটুকু কানে এসেছে, তাতে ওর বুঝতে বাকি থাকেনি। তাই স্কুলের পরীক্ষা শেষ হতে একাই চলে এসেছে। মণিকাকু তাঁর এই দামাল ভাগনেটিকে বিলক্ষণ চেনেন। তাই প্রথম দিন নিজেই নিয়ে বেরিয়েছিলেন। তার মধ্যেই ওই ব্যাপার। সৌম্য অবশ্য মণিকাকুর কথায় কান না দিয়ে বলেছিল, ‘কেন কাকু? এখনও তো আলো-।’
সৌম্যর কথা তখনও শেষ হয়নি। হঠাৎ দূরে জঙ্গলের দিক থেকে ঢং ঢং শব্দে ঘণ্টার আওয়াজ শুরু হল। প্রায় তৎক্ষণাৎ কাছেই ঘন গাছপালার ভিতর হুড়মুড় শব্দে কোনো প্রাণী ছুটে গেল। চমকে উঠে চোখ ফিরিয়েও সৌম্য দেখতে পেল না কিছু। বলল, “ওটা কী মণিকাকু?’
উত্তরে ওর হাত ধরে হনহন করে চলতে চলতে মণিকাকু বললেন, ‘এ কলকাতা নয় সৌম্য। জনাই গড়ের জঙ্গলে শুধু বুনো জানোয়ার নয়, অন্য বদনামও আছে। অন্ধকার নামলে কেউ আর এদিকে আসে না।’
মণিকাকুর দিকে তাকিয়ে সৌম্য আর কোনো প্রশ্ন করেনি। কিন্তু ভিতরে ততক্ষণে জমে উঠেছে এক ঝাঁক প্রশ্ন। সেগুলো নিয়ে পরের দিনই হাজির হয়েছিল বুধনের কাছে। বুধন মণিকাকুর বাসায় মাঝবয়সি কাজের মানুষ। প্রতিদিন সকালে আসে। ঘরের সব কাজ সেরে দুপুরের আগেই ফিরে যায়। কিন্তু বুধনের কাছ থেকে জানা গেল সামান্যই। সহজ নির্বিরোধী মানুষ বুধন একটু ভিতু গোছের। প্রশ্ন করতেই দুই হাত কপালে ঠেকিয়ে বলেছিল, ‘খবরদার, ওদিকে যেয়ো না দাদাবাবু।’
শোণিত উপাখ্যান বর্তমান pdf – সৈয়দ অনির্বাণ Shonit Upakhyan Bartaman pdf – Syed Aunirbaan
‘কেন?’ অবাক হয়ে প্রশ্ন করেছিল সৌম্য।
‘জায়গাটা ভালো নয়। ফের কপালে হাত ঠেকিয়ে বলেছিল বুধন, ওদিকে অপদেবতাদের বাস। ভর দুপুরে হা-হা শব্দে কখনো হেঁকে ওঠেন তাঁরা। আগে ওদিকে যারা কাঠ বা পাতা কুড়োতে যেত, তাদের
অনেকেই সেই ডাক শুনেছে। বেচারার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, এ ব্যাপারে বেশিক্ষণ আলোচনায় একেবারেই রাজি নয়।
কিন্তু সৌম্য নাছোড়। তাড়াতাড়ি বলল, ‘তবে গত সন্ধ্যেয় ওদিক থেকে যে ঘণ্টার আওয়াজ শুনতে পেলাম!’
‘পোড়ো এক মন্দির আছে ওদিকে। ভিতরে ঘণ্টা বাঁধা। ওদিকে যেনারা থাকেন, কখনো ভর সন্ধ্যেয় তারাই সেই ঘণ্টা বাজিয়ে জানান দেয়। বলতে গিয়ে শঙ্কার ছায়া বুধনের চোখে।
কৌতূহল না মিটলেও বুধনকে আর ঘাঁটায়নি ও। তবে সেজন্য নতুন তথ্য জোগাড়ে সমস্যা হয়নি। সেসব বুধন যেমন বলেছিল, তার চাইতে কম রোমহর্ষক নয়। জনাইগড়ের জঙ্গলের ভিতর মন্দিরই আছে একটা। অনেক দিনের পুরোনো। সংস্কারের অভাবে এখন প্রায় জীর্ণ দশা। কাছেই রয়েছে ছোটো এক পাহাড়ি নদী। নাম কমলাঝোরা। ভুলেও সেই নদীর কাছে কেউ যায় না।
এসব খবর সৌম্য যার কাছ থেকে জোগাড় করেছিল সে ঈশা গুছাই। মণিকাকুর অফিসের চাপরাশি। হঠাৎ জ্বরে পড়ে মণিকাকু সেদিন অফিসে যেতে পারেনি। খানিক বেলায় ঈশা গুছাই অফিসের কিছু কাগজপত্র নিয়ে এসেছিল। ছোটোখাটো চেহারার মানুষটির গা ভরতি নানা রঙের অদ্ভুত সব পাথরের গয়না। তার উপর ওই অদ্ভুত নাম। সব মিলিয়ে বেশ অবাকই হয়েছিল ও। পরে মণিকাকুর কাছেই জেনেছিল, ঈশা গুছাই রাজমহল পাহাড়ের আদি মানুষ। একসময় পাহাড়েই বাস করত ওরা। এখন কিছুটা ছড়িয়ে পড়লেও পুরোনো রীতিনীতি ছাড়েনি। অন্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে তেমন মেলামেশাও করে না। ব্যতিক্রম ঈশা গুছাই। কাজ করে পি.ডব্লিউ.ডি. অফিসে। যেমন ভালোমানুষ, তেমন বিশ্বস্ত।
কাজেরও বটে। অফিসের সবাই পছন্দ করে ওকে। কিন্তু ঈশা গুছাইও থাকে না এখানে। অফিসে যাওয়া-আসা করে মাইল তিনেক দূরে পাহাড়ের কাছে ওদের গ্রাম থেকে। পুরোটাই নির্জন বনপথ। ঈশা গুছাই অবশ্য পরোয়া করে না। প্রতিদিন ঠিক সময়ে অফিসে আসে। সাহেবরা আসার আগেই তাদের চেয়ার-টেবিল ঝাড়পোঁছ করে রাখে। কাজে ফাঁকি দিতে জানে না।
এহেন মানুষের সঙ্গে আলাপ জমাতে সৌম্য এরপর দেরি করেনি। মণিকাকুর কোয়ার্টার অফিসের কাছেই। তাই সমস্যা হয়নি। ঈশা গুছাইও নিরাশ করেনি ওকে। দিন কয়েকের মধ্যে সৌম্য অনেক কথাই জেনেছে ওর কাছ থেকে। সেদিন কথার ফাঁকে পাহাড়ি নদীর কথা জিজ্ঞাসা করেছিল ওকেও।
উত্তরে ডান হাত কপালে আর বুকে ঠেকিয়ে ঈশা গুছাই বলেছিল, ‘ওই কমলাঝোরা আগে এমন ছিল না ছোটোবাবু। তিরতির করে সামান্য জল বইত মাত্র। এখন রাক্ষসী। ফি বছর মানুষের রক্ত ছাড়া ওর পেট ভরে না। আমাদের গ্রামের পাশ দিয়েও তখন এক নদী বইত। তারও নাম ছিল কমলা নদী। গ্রামের মানুষ বলত কমলা মাই। ওই নদীর জলই তখন ছিল গ্রামের মানুষের ভরসা। খেতে ফসল ফলত ওই জলে।
তারপর হঠাৎই অল্প দিনের মধ্যে শুকিয়ে গেল কমলা নদী। জলের অভাবে সাফ হয়ে গেল গ্রাম। অনেকেই চলে গেছে পাহাড়ের অন্য দিকে। সব মানুষের পাপে ছোটোবাবু।”
‘পাপ! কেন?’ ঈশা গুছাই থামতে প্রশ্ন করল সৌম্য।
‘বললাম তো, আমাদের মানুষের পাপ। ধরা গলায় উত্তর দিল ঈশা গুছাই, ‘ক-দিন আগেও এই জনাই গড় অন্যরকম ছিল! মানুষের হাতে আজ সব শেষ হবার জোগাড়! সাফ হয়ে গেছে জঙ্গল, গাছপালা। শুনতে পাই, পাহাড়েও নাকি হাত পড়বে এবার। পাথর ফাটিয়ে চালান যাবে কারখানায়।
Janaigarer Jungle Rahasso pdf download link\
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.