এই বৃহৎ উপন্যাস Kacher Manush pdf কাছের মানুষ pdf এর আখ্যানভাগের একদিকে আছে দুই প্রজন্মের দুই নারী। মা ও মেয়ে। অন্যদিকে এই দুই নারীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে একদল রঙিন মানুষ। সম্পর্কে এরা সবাই কাছের মানুষ। অথচ প্রত্যেকে একাকী, নিঃসঙ্গ। বর্তমান জীবনের প্রেক্ষাপটে লেখা এই উপন্যাস সেই নির্জন মানুষের আত্মানুসন্ধানের আখ্যান।
Kacher Manush pdf কাছের মানুষ pdf কাহিনিঃ
জের প্রয়োজনের কথা ভেবে, নিজের সুখ-সমৃদ্ধি-চাহিদার কথা মাথায় রেখে দলবদ্ধ হয়েছে মানুষ। গড়েছে সমাজ, নির্মাণ করেছে পরিবার, অসংখ্য ধরা-অধরা সম্পর্কের সুতোয় জড়িয়ে নিয়েছে নিজেকে। চিরকাল মানুষ বিশ্বাস করতে চেয়েছে সে পরিবারের মধ্যে, দলের মধ্যে, সমাজের মধ্যে বেঁচে থাকতে চায়, সঙ্গীহীন জীবন যেন বৃথা। অথচ কী আশ্চর্য, প্রতিটি মানুষই কিন্তু মূলত একা একাই। আজীবন। জীবনের প্রতিটি স্তরে তার ভিন্ন ভিন্ন নামের সহযাত্রী জোটে বটে, কিন্তু তাতে হৃদয়ের নির্জনতা ঘোচে না। এই উপন্যাস সেই নির্জনতারই অনুসন্ধান।
এই বৃহৎ উপন্যাসের চালচিত্র সমসময়, পটভূমি সমসাময়িক সমাজ। এর আখ্যানভাগের একদিকে রয়েছে এ-যুগের মা-মেয়ের গল্প, সফল মানুষের গোপন ব্যর্থতার কাহিনী, বিফল মানুষের সফল না হতে পারার আকুতি, নতুন প্রজন্মের আশা আকাঙ্ক্ষার গল্প, বর্তমান সমাজের অসহায়তা আর পাপবোধের কথা, ব্যর্থ বিপ্লবের যন্ত্রণা, দুই প্রজন্মের দ্বন্দ্ব। সঙ্গে প্রতীকের মতো সমান্তরাল ভাবে চলেছে একটা পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি গড়ে ওঠার উপাখ্যান। এই বাড়ি যেন সময়ের বিবেক, সময়ের মূল্যবোধ, সময়ের অনুশাসন। এর মধ্যে দিয়েই লেখক খুঁজতে চেয়েছেন মানুষের নিঃসঙ্গতার উৎস। আজকের আত্মকেন্দ্রিক আধুনিক সমাজই কি মানুষকে লক্ষ্যহীন উচ্চাশার দিকে তাড়িয়ে নিয়ে চলে ? নাকি সেই চিরন্তন ষড়রিপু আবহমান কাল ধরে মানুষের মনে বুনে চলেছে একাকিত্বের বীজ?
শুকতারার ১০১ ভূতের গল্প pdf প্রথম খন্ড – দেব সাহিত্য কুটীর Shuktarar 101 Bhuter Golpo pdf 1st Part
এই উপন্যাস জুড়ে অজস্র চরিত্রের মিছিল। কেউ বা বৃদ্ধ, কেউ বা মধ্যবয়স্ক, কেউ কিশোর কিশোরী, তরুণ তরুণী, কেউ বা নেহাতই শিশু। ভিন্ন ভিন্ন প্রজন্মের মানুষ হওয়া সত্ত্বেও কোথায় যেন এরা অভিন্ন, এদের সকলের মধ্যেই চারিয়ে যাচ্ছে এক দুঃখী বিষণ্ণতা। কেন?
উপন্যাসের নামটিও ভারী ব্যঞ্জনাময়। গল্পের পাত্রপাত্রী সবই যেন আমাদের অতি পরিচিত, নিকটজন। অর্থাৎ কাছের মানুষ। আবার এই নিকটজনরা পরস্পরেরখুব আপন হওয়া সত্ত্বেও সত্যিই কি কেউ কারও প্রকৃত কাছের মানুষ? এইসব জীবনমুখী প্রশ্নের উত্তর প্রকীর্ণ আছে সুচিত্রা ভট্টাচার্যের এই উপন্যাসের পাতায় পাতায়।
Kacher Manush pdf কাছের মানুষ pdf রিভিউঃ
“মানুষ তো চিরকালই নিঃসঙ্গ। কি ভিড়ে,কি নির্জনে।নিজের চারিদিকে প্রিয়জনের বলয় সৃষ্টি করে বৃথাই সেই নিসঙ্গতা ঘোচাতে চায় মানুষ। হায় রে মানুষ!”
যখন প্রথম এই দীর্ঘ উপন্যাস শুরু করেছিলাম টান পাচ্ছিলাম না একটুও, তারপর পড়তে পড়তে ঘটনাপ্রবাহ এগোতে থাকে, খুলে যেতে থাকে একের পর এক স্তর, উন্মোচিত হতে থাকে কিছু লুকিয়ে রাখা সত্যির, মুখোমুখি হতে হয় কঠিন আর রূঢ় বাস্তবের।
পরিবার, আত্নীয় স্বজন! কতশত বন্ধন, তাদের ঘিরে কতো সম্পর্কের মারপ্যাচ। এতোকিছুর ভীড়েও যে প্রতিটি মানুষ গভীরভাবে সম্পর্কহীন, বড্ড একা। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের ‘কাছের মানুষ’ উপন্যাস যেন তারই একটি জ্বলন্ত উদাহরণ।
তিতির, ইন্দ্রাণী, শুভাশিস, আদিত্য, সুকান্ত, জয়মোহন, শিবসুন্দর, টোটো, জয়ী, শংকর, ছন্দা, তনুময় আরও কতো চরিত্রের সমাহারে লেখিকা ফুটিয়ে তুলেছেন একান্নবর্তী সংসারের ভাঙ্গন, চাকরিসূত্রে বাইরে চলে যাওয়ার ফলে মা-ছেলের মধ্যে বেড়ে চলা দূরত্ব, বন্ধুত্বের ভাঙন, বোঝাপড়া,গ্রাম জীবনের সরলতা ও রাজনীতি, তারই মধ্যে এক উন্নতশীর বৃদ্ধ ডাক্তারের জীবনযাপন, কিশোর বয়েসের মান-অভিমান, ভালোবাসার লুকোচুরি, সফল মানুষের গোপন ব্যর্থতার কাহিনী, বিফল মানুষের সফল না হতে পারার আকুতি, নতুন প্রজন্মের আশা-আকাঙ্খার গল্প, বর্তমান সমাজের অসহায়তা আর পাপবোধের কথা।
জয়মোহন নয় ,শিবসুন্দরের মৃত্যুটা আমাকে নাড়া দিয়েছিল প্রথম। আদিত্য রায়, যে একজন আদ্যপ্রান্ত অপদার্থ বলেই মনে হচ্ছিল ,শেষবেলায় তাকে বড় অসহায় মনে হল। এমন একজন পুরুষ যে সুসন্তান হতে পারেনি, স্বামী হিসেবে কর্তব্য করতে পারেনি,পিতা হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারেনি বাপ্পা-তিতিরের। কিন্তু যে মানুষ গুলো, সকল জাগতিক কর্মে অক্ষম হয় তারাই হয়তো ক্ষমার মহীরুহ হয়। হতে পারে সেটা তার অসহায়ত্বের দরুন, অথবা সেটাই ঈশ্বরের তাকে দেওয়া আশীর্বাদ।
চন্দ্রহাস ২ মহাকাল pdf – সৌরভ চক্রবর্তী – Chandrahas 2 pdf Mohakal – Sourav Chakraborty
বড় উপন্যাসগুলোতে সাধারণত অনেক চরিত্ররা থাকে, এক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। এরা সবাই একে অপরের খুব কাছের মানুষ। কিন্তু এই চেনাজানা মানুষের ভীড়ে অনেকেই আবার খুব একলা, খুব নিঃসঙ্গ। উপন্যাসের প্রতিটি পাতায় পাতায় যেসব ঘটনা বর্ণিত হয়েছে তার বেশিরভাগই খুব সাধারণ। একটি যৌথ পরিবারে যা যা ঘটে থাকে। সেই চিরন্তন ভাঙ্গাগড়ার খেলা। আমাদের চারপাশে যেমনটি হচ্ছে। বড় পরিবার ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হওয়ার গল্প। বড় বাড়ি ভেঙ্গে অ্যাপার্টমেন্ট উঠে যাচ্ছে তার গল্প। চির পরিচিত মানুষের মৃত্যুর পর বদলে যাওয়া বাড়ির পরিবেশের গল্প। এই সবকিছু তো আমাদের জীবন থেকে নেওয়া। আর এই সব ঘটনা উপন্যাসে আবর্তিত হয়েছে ইন্দ্রানী আর তিতিরকে কেন্দ্র করে, উপযোগী সঙ্গত করেছে অন্যান্য চরিত্ররা তা বলাই বাহুল্য।
সুচিত্রা ভট্টাচার্য বরাবরই আমার অন্যতম প্রিয় লেখিকদের মধ্যে একজন, তার গল্পের বাঁধুনি, এত চরিত্রের মধ্যে এসেও কখনও দুর্বল মনে হয়না।কিছু বই হয় সমুদ্রের মত। সেই সমুদ্রের ঘটনা গুলোর সাথে, চরিত্র গুলোর সাথে নিজেকে ভাসিয়ে দিতে হয়, ভাসতে ভাসতে কখন যে পাড়ে আছড়ে পড়ে তা যেন টের পাওয়া যায় না। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের কাছের মানুষ ঠিক যেন তেমন এক সমুদ্র, ঘটনা, চরিত্র, জীবন, বাস্তব, জয় – পরাজয়, প্রতিকূলতায় ভরা এক অকূল পাথার।
উপন্যাসের নামটি ভারী ব্যঞ্জনাময়। গল্পের পাত্রপাত্রী সবই যেন আমাদের অতি পরিচিত, নিকটজন। অর্থাৎ কাছের মানুষ। আবার এই নিকটজনরা পরস্পরের খুব আপন হওয়া সত্ত্বেও সত্যিই আদেও কি কেউ কারও প্রকৃত কাছের মানুষ? নাকি সবটাই নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার সুকৌশল? একজন মানুষ কি সম্পূর্ণ ভুল বা সম্পূর্ণ ঠিক হতে পারে? দোষে – গুণেই তো একজন মানুষ প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে…
নিজেদের জীবনে, উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্রের মাঝে কে কার কাছের মানুষ আপনিও পড়তে পড়তে খুঁজে নিন না হয়…
Kacher Manush pdf কাছের মানুষ pdf REVIEW
সুচিত্রা ভট্টাচার্যের কাছের মানুষ উপন্যাসটি নাগরিক মধ্যবিত্ত জীবনকেন্দ্রিক সামাজিক উপন্যাস। উপন্যাসের মধ্যে ব্যক্তির স্বাতন্ত্র্যবোধ সামাজিক ঐক্য চেতনা পরস্পর সংঘাতের মধ্যেই নতুন সমাজের দিকে এগিয়ে চলতে চলতে পুরনো কাঠামোটিকে ধরে রাখার প্রয়াস রূপ পেয়েছে। মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কই বৃহত্তর পরিসরে সামাজিক সম্পর্কে আখ্যা পায়। এখানে কাহিনীর মুখ্য দুই চরিত্র মা ও মেয়ে ইন্দ্রানী ও তিতির। একটি পুরনো বাড়ি, তার অনেকগুলি মানুষের জীবনে নানা ঘটনা আর পরস্পরের সম্পর্কের মাধ্যমে লেখক আধুনিক নাগরিক সমাজ ও তার বিচিত্র জটিলতাকে তুলে ধরতে চেয়েছেন। অনেকগুলি প্রজন্ম একই বৃহত্তর সময়ের আধারে বাস করে।
পাশাপাশি নিজস্ব পরিসরের মধ্যে নিজস্ব যাপনের সঙ্গে অনিবার্যভাবে প্রজন্মগত মূল্যবোধ বিবেক আচরণ সামাজিক অনুশাসনকে মান্যতা দেওয়ার মতই দৃষ্টিভঙ্গির তারতম ঘটে যায়। আর এই সব কিছুর সঙ্গে জড়িয়ে যায় ব্যক্তি মানুষের নিজস্ব প্রবৃত্তি, চারিত্রিক ধর্মের বৈষম্যজনিত সংঘর্ষ। উপন্যাসে একটি পুরনো বাড়ি দিনের শেষে আর একটা নতুন বাড়ি গড়ে ওঠে। আসলে সমাজের পুরনো কাঠানোটাই নিয়ত ভাঙ্গা গড়ার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলে আর তার প্রভাব অনিবার্যভাবে পড়ে মানুষের জীবনে। তবু কাহিনী শেষে মানুষের একাকীত্বের মোচন ঘটে না।
অধিকাংশ চরিত্রই শেষ পর্যন্ত নিঃসঙ্গতা বৃত্তে দাঁড়িয়ে থাকে। কাহিনীতে তিতির ইন্দ্রানী, সুদীপ রুনা, আদিত্য ইন্দ্রানী, শুভাশিস ইন্দ্রানী, আদিত্য তিতির, কন্দর্প মধুমিতা, শুভাশিস ছন্দা, টোটো শুভাশিস, তিতির সুকান্ত, তনুময় ইন্দ্রানী, জয়মোহন ইন্দ্রানী এমন অজস্র চরিত্রের পারস্পরিক সম্পর্ক নানা জাতীয় ছবি ফুটে ওঠে। এই সম্পর্কের কোনটা গভীর আবার কোনটার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। লেখক দেখান মানুষের জীবন কিছুটা তার নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সমাজ নামক নিয়তি তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভবিষ্যতের দিকে টেনে নিয়ে চলে। আর এর মধ্যেই পূর্বকালের মানুষের সামাজিক মন, নতুন প্রজন্মের আত্মকেন্দ্রিক উচ্চাশা, সমাজবিগর্হিত সম্বন্ধের জন্য গোপন আকর্ষণ, পাপবোধ, আর্থ সামাজিক পরিবর্তন, উচ্চ ও মধ্যবিত্তের নাগরিক জীবনের প্রতিদিনের নানামুখী চলনের ছবিটি ফুটে ওঠে।
এই চলনের মধ্যে কিছু মানুষের অসহায়তা নিরুপায়ত্বের, কিছু মানুষের প্রবল উচ্চাকাঙ্ক্ষার আবার কিছু মানুষের গোপন আত্মক্ষয়ের মধ্য দিয়ে ক্লান্তিতে নিজেকে টেনে নিয়ে চলায় কাহিনী শেষ হয়। টোটোর মতো নবীন সময়ের তরুণের দল যখন চেনা পরিসর ছেড়ে বহু দূরে চলে যায়। নতুন কোনও সমাজ পরিবেশে তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের গল্প বীজ বুনতে থাকে। আর সবার উপরে এটাই সত্য হয় যে, মানুষ সারা জীবন তার একজন কাছের নির্ভরযোগ্য সম্পর্ক খুঁজে চলে। সেই সম্পর্কের নির্ভরতার সন্ধানেই মানুষের সারা জীবন পথ চলা।
Kacher Manush pdf কাছের মানুষ pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.