অভিজিৎ রায় ও ফরিদ আহমেদ এর Mohabiswe Pran O Buddhimottar Khoje pdf মহাবিশ্বের প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে pdf ডাউনলোড করুন ও Mohabiswe Pran O Buddhimottar Khoje pdf মহাবিশ্বের প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে pdf পড়ুন।
Mohabiswe Pran O Buddhimottar Khoje pdf মহাবিশ্বের প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে pdf
প্রাণ বা জীবন কি (What is life?)- এ প্রশ্নটি মানব মনের সব চাইতে পুরাতন অথচ কৌতূহলোদ্দীপক প্রশ্নগুলোর একটি। এ প্রশ্নটির ব্যঞ্জনায় যুগে যুগে আলোড়িত হয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সাহিত্যিক, কবি, গীতিকার, দার্শনিক, বৈরাগী সকলেই। গীতিকারেরা গান রচনা করেছেন জীবন- সে তো পদ্মপাতায় শিশির বিন্দু’। কবি তার কল্পণার মায়াজাল বুনে লিখেছেন- ‘life is nothing but an empty dream’। বৈরাগী হয়ত মারফতি করে বলেছেন – “জীবনটা তো মায়া ছাড়া আর কিছু নয়’। আসলে জীবনটা যে সত্যিই কি – এ প্রশ্নের উত্তর দার্শনিক-অদার্শনিক, পণ্ডিত-মূর্খ কারো কাছেই খুব সঠিকভাবে বোধ হয় পাওয়া যাবে না।
বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে জীবন বা প্রাণ কি এটা জানতে হলে ‘জীবন কি নয়’ এটা বোধ হয় আগে ভালভাবে জানা দরকার। জীবজগৎ আর জড়জগৎ – এ নিয়েই আমাদের চিরচেনা বিশ্বজগৎ। প্রাণের নিশ্চয়ই এমন কোন নান্দনিক বিশিষ্টতা আছে যা জড় পদার্থ থেকে আলাদা। আর সে কারণেই অ্যামিবা, পুঁটিমাছ, কচু শাক, হাতি, তিমি, ইঁদুর বা মানুষদের সহজেই ইট, কাঠ, লোহা, পাথর থেকে আলাদা করা যায়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কি সেই নান্দনিক বিশিষ্টতা?
প্রাচীনকালের মানুষেরা যে এ সমস্যা নিয়ে ভাবেনি তা নয়। জীবিতদের কি ভাবে সনাক্ত করা যায়? একটি মৃতদেহ আর একটি জীবিত দেহের মধ্যে পার্থক্যই বা কি? এ প্রশ্নগুলো দিয়ে তাদের অনুসন্ধিৎসু মন সবসময়ই আন্দোলিত হয়েছে পুরোমাত্রায়। কিন্তু এই প্রশ্নগুলোর কোন সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না পেয়ে তারা শেষপর্যন্ত কল্পনা করে নিয়েছে অদৃশ্য আত্মার। ভেবেছে আত্মাই বুঝি জীবন ও মৃত্যুর যোগসূত্র। কল্পনার ফানুস উড়িয়ে তারা ভেবেছে ঈশ্বরের নির্দেশে আজরাইল বা যমদূত এসে প্রাণহরণ করলেই কেবল একটি মানুষ মারা যায়। আর তখন তার দেহস্থিত আত্মা পাড়ি জমায় পরলোকে। মৃত্যু নিয়ে মানুষের এ ধরনের ভাববাদী চিন্তা জন্ম দিয়েছে আধ্যাত্মবাদের। আধ্যাত্মবাদ স্বতঃপ্রমাণ হিসেবেই ধরে নেয়-‘আত্মা জন্মহীন, নিত্য, অক্ষয়। শরীর হত হলেও আত্মা হত হয় না।’
মজার ব্যাপার হল, একদিকে যেমন আত্মাকে অমর অক্ষয় বলা হচ্ছে, জোর গলায় প্রচার করা হচ্ছে আত্মাকে কাটা যায় না, পোড়ানো যায় না, আবার সেই আত্মাকেই পাপের শাস্তিস্বরূপ নরকে ধারলো অস্ত্র দিয়ে কাটা, গরম তেলে পোড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ সবই আধ্যাত্মবাদের স্ববিরোধিতা। ধর্মগ্রন্থগুলি ঘাটলেই এ ধরনের স্ববিরোধিতার হাজারো দৃষ্টান্ত পাওয়া যাবে। স্ববিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও আত্মার অস্তিত্ব দিয়ে জীবনকে ব্যাখ্যা করতে প্রয়াসী হয়েছে মানুষ। কারণ সে সময় বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি ছিল সীমিত। মৃত্যুর সঠিক কারণ ছিল তাদের জানার বাইরে। সেজন্য অনেক ধর্মবাদীরাই ‘আত্মা’ কিংবা ‘মন’ কে জীবনের আধাররূপী বস্তু হিসেবে কল্পনা করেছেন। যেমন, ইসলামিক মিথ বলছে, আল্লাহ মানবজাতির সকল আত্মা একটি নির্দিষ্ট দিনে তৈরী করে বেহেস্তে একটি নির্দিষ্ট স্থানে (ইল্লিন) বন্দি করে রেখে দিয়েছেন।
আল্লাহর ইচ্ছাতেই নতুন নতুন প্রাণ সঞ্চারের জন্য একেকটি আত্মাকে তুলে নিয়ে মর্তে পাঠানো হয়। আবার আচার্য শঙ্কর তার ব্রহ্মসূত্রভাষ্যে বলেছেন, “মন হল আত্মার উপাধি স্বরূপ’। ওদিকে আবার সাংখ্যদর্শনের মতে- ‘আত্মা চৈতন্যস্বরূপ’ (সাংখ্যসুত্র ৫/৬৯)। জৈন দর্শনে বলা হয়েছে, চৈতন্যই জীবের লক্ষণ বা আত্মার ধর্ম।’ (ষড়দর্শন সমুচ্চয়, পৃঃ ৫০) স্বামী বিবেকানন্দ পর্যন্ত ভাবতেন, ‘চৈতন্য বা চেতনাই আত্মা।’
অভিজিৎ রায় যুক্তিবাদী লেখক, ব্লগার এবং মুক্তমনা ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা। বিজ্ঞানের সর্বশেষ তথ্যের সুসংবদ্ধ বিশ্লেষণের আলোয় লেখা ‘আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী’, ‘মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে’, ‘সমকামিতা:একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান’, শূন্য থেকে মহাবিশ্ব’ বইগুলো তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করেছে বর্তমান সময়ের বিজ্ঞানমনস্ক পাঠকের অন্যতম প্রিয় লেখক হিসাবে। তার লেখা দুটি বই ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ এবং ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ মুক্তমনা মহলে ব্যাপকভাবে আলোচিত ও প্রশংসিত হয়। সুসাহিত্যিক, অনুসন্ধিৎসু, সমাজ- সচেতন এবং সত্য সন্ধান ও প্রকাশে আপোষহীন অভিজিৎ রায়ের স্বপ্ন ছিলো বিজ্ঞান, মানবতাবাদ ও যুক্তিবাদের আলোকে সমাজ প্রতিষ্ঠার। সেই অর্জনের পথের সমমনাদের নিয়ে শুরু করেছিলেন মুক্তমনা ব্লগ যা আজও বাংলাভাষী বিজ্ঞানকর্মী, যুক্তিবাদী, মানবতাবাদী ও নির্ধার্মিকদের সবচেয়ে বড় অনলাইন সংগঠন।
অভিজিৎ রায়ের জন্ম ১২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ সালে। তখন বাবা অধ্যাপক অজয় রায় সক্রিয়ভাবে যোগ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে, আর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা থেকে রক্ষা পেতে তাঁর মা শেফালি রায় আশ্রয় নিয়েছেন ভারতের আসামে। স্বাধীনতার পরে বাবার কর্মসূত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শৈশব-কৈশোর কাটে অভিজিৎ রায়ের। তিনি যন্ত্রকৌশলে স্নাতক শিক্ষা সম্পন্ন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপরে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর থেকে বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে সফটওয়্যার আর্কিটেক্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন আমেরিকার আটলান্টা শহরে।”
অনলাইনে অজস্র লেখালেখি ও প্রকাশিত দশটি বইয়ের মধ্যে দিয়ে অভিজিৎ অন্ধবিশ্বাস আঁকড়ে থাকা সমাজব্যবস্থার ভিত্তিমূলে আঘাত করে করে অবিরাম তুলে ধরেছেন মানবতার কথা। সাহস যুগিয়েছেন বিজ্ঞান ও যুক্তি’তে আস্থা রাখতে। ‘সমকামিতা: একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান’ বইটি প্রকাশিত হয় ২০০৯ সালে যার মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের সমাজচ্যুত করে রাখা সমকামী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিজ্ঞান ও যুক্তি দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন মানুষের ক্ষুদ্র একটি অংশের মধ্যে সমকামী প্রবৃত্তি থাকা অপরাধ বা ক্ষতিকর নয়, বরং তা প্রাণীজগতের স্বাভাবিক চিত্র। এর মাত্র দুই বছর পর প্রকাশিত হয় ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ (সহ-লেখক: রায়হান আবীর) বইটি যা বিজ্ঞানপ্রিয় ও মুক্তমনা মহলে ব্যাপক আলোচিত ও প্রশংসিত হয়।
এই বইটিতে আধুনিক বিজ্ঞান ও দর্শনের আলোকে নাস্তিকতাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সবচেয়ে যৌক্তিক ও মানবিক অবস্থানে। ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ (২০১৪) বই খানিতে তিনি ধর্মকে তুলনা করেছেন ভাইরাসের সাথে এই বলে যে, ‘ধর্ম’ ব্যপারটি মানুষকে অযৌক্তিক ঈশ্বর ও অমানবিক প্রথায় বিশ্বাস স্থাপন থেকে শুরু করে আত্মঘাতী পর্যন্ত করে তুলতে পারে।
অভিজিৎ রায় ও ফরিদ আহমেদ এর Mohabiswe Pran O Buddhimottar Khoje pdf মহাবিশ্বের প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে pdf ডাউনলোড করুন এখান থেকে ও Mohabiswe Pran O Buddhimottar Khoje pdf মহাবিশ্বের প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে pdf পড়ুন এখান থেকে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.