পরশপাথর pdf – প্রতিভা বসু Parash Pathar pdf – Pratibha Basu

পরশপাথর pdf - প্রতিভা বসু Parash Pathar pdf - Pratibha Basu
পরশপাথর pdf - প্রতিভা বসু Parash Pathar pdf - Pratibha Basu

প্রতিভা বসুর Parash Pathar pdf পরশপাথর pdf ডাউনলোড করুন ও Parash Pathar pdf পরশপাথর pdf পড়ুন।

পরশপাথর pdf - প্রতিভা বসু Parash Pathar pdf - Pratibha Basu
পরশপাথর pdf – প্রতিভা বসু Parash Pathar pdf – Pratibha Basu

Parash Pathar pdf পরশপাথর pdf নমুনাঃ

সুকুমার বিয়ে ক’রে এলো। বয়েস কিছুটা বেশী হ’য়ে গেছে। তা আর কী করা। আঠেরো উনিশ বছর বয়েস থেকে পিতামাতা ভাইবোনের রজ্জু গলায় বেঁধে মুক্তি কাকে বলে জানতেই সময় তাকে ফাঁকি দিয়েছে। এখন ভাইয়েরা সবাই প্রায় কাজকর্মের যোগ্য হ’য়ে উঠেছে, মেজ ভাইতো বটেই। সে আরো আগে নেমে পড়তে চেয়েছিলো উপার্জনের ধান্দায়। সুকুমারই বাঁধা দিয়েছে, বলেছে, ‘আমারতো কিছু হ’লোই না, তুই অন্তত বি.এ.টা পাশ কর।

আমাকে দেখুন pdf – প্রফুল্ল রায় – Amake Dekhun pdf – Prafulla Roy

বরং টিউশনি নে কলেজের খরচটা যাতে হ’তে পারে। আর অন্য কথা ভাববার দিনতো পরেই আছে। ভাগ্যিস বড়োমামা তোকে নিয়ে গিয়েছিলেন, নইলে এই আমার দশাই হ’তো। ‘মেজ ভাই দাদার কথায় কৃতজ্ঞ হ’য়ে বললো, ‘তুমি আর এই ঘানি কতোদিন টানবে। বরং একটা কাজে ঢুকে পড়াই ভালো।’ সুকুমার সে কথা উড়িয়ে দিয়ে বললো, আই.এ.টা যখন পাশ ক’রে ফেলেছিস, ঐ নাক মুখ বুজে বি. এটাও ক’রেনে। একটু ভালো কাজ জুটবে হয়তো।

সব শুনে সুকুমারের বাবা বলেন, ‘না না ও একটা কাজেই ঢুকে পড়ুক। আই এ. পাশ করেছে তাই যথেষ্ট—। গরীবের আর ঘোড়া রোগে দরকার নেই।’ একথা বলতে বলতে দীর্ঘশ্বাস পড়ে তাঁর। গরীব বলে একসময়ে জ্ঞাতিগুষ্ঠির মধ্যেই অনেককে অনেকরকম তাচ্ছিল্য করেছেন, মেশেননি তাদের সঙ্গে, এখন তারই ফল হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। মনের মধ্যে ছবির মতো সব কথা ভেসে ওঠে।

মিত্র পরিবারটির ভয়ানক কিছু তালুক মুলুক না থাকলেও যা ছিলো সেটাও নেহাৎ মন্দ নয়। গ্রামের একান্নবর্তী পরিবার। গ্রামটির নাম জলাঞ্জলি। কোন্ ভাবুক এই গ্রামের এই নাম দিয়েছিলো কে জানে। তবে এই গ্রাম সম্পর্কে এই নামটি প্রযোজ্যই বটে। একান্তই জলে ঘেরা গ্রাম। মনে হয় কয়েকটি ভূখণ্ড ব্যতিত সবই জলাঞ্জলি গেছে। এক একটি বড় ভূখণ্ড নিয়ে এক একটি বংশের জন্মতালিকা। অর্থাৎ সমস্ত জ্ঞাতি গোষ্ঠি নিয়ে এক একটি পাড়া। তাদের মধ্যে কেউ ধনী কেউ দরিদ্র। পাড়াগুলোর নামও সে ভাবেই তৈরী। যেমন মিত্রবাড়ি, ঘোষের বাড়ি, চৌধুরী বাড়ি। আরো যে সব ভূখণ্ডে কোনো ধনী ব্যক্তি সৃষ্টি হয়নি তাদের নামের শেষে থাকে পাড়া। যেমন ঠাকুর পাড়া শিকদার পাড়া, কুমোর পাড়া, জেলে পাড়া ইত্যাদি । এই মিত্রবাড়ি নামটি সদাশয় মিত্রের জন্যই।

তিনিই একশো দশ খানা মদের দোকানের মালিক হ’য়ে অঢেল টাকা করেন। মাত্রই তিনপুরুষের বড়োলোক। চার পুরুষে এসেই তিন ভাইয়ের এক ভাইয়ের সংসার একেবারে ছিন্ন ভিন্ন হ’য়ে গেল। এই ভায়েরই সম্পত্তির ভাগটা কিছু বেশী ছিলো, কেননা অংশিদারদের মধ্যে তিন বারার মধ্যে তিনি ছিলেন তাঁর বাবার একমাত্র পুত্র আর অন্য বাবাদের পুত্রসংখ্যা ছিলো পাঁচ। সুতরাং একা হ’য়ে তিনি যতোটা অংশ পাবেন এবং সুখে থাকবেন, স্বভাবতই সেটা তার চার ভাগ হ’লে তা পাবেন না। সেজন্য যৌথ পরিবারটির এই ভাইটি আলাদা হ’য়ে গেলেন।

মদের দোকানের দৌলতে যে পরিমাণ বিষয় আশয় করে গিয়েছিলেন সদাশয় মিত্র তার পরিমাণ বলা যায় অঢেলই ছিলো। এক ছেলে হবার দরুণ সনাতন মির আলাদা হয়ে গিয়ে একটু বেশী দুধে ভাতে থাকলেও অন্য ভাইয়েরাও তাদের সন্তানসম্ভূতি নিয়ে মোটামুটি দুধে ভাতেই থাকতে পেরেছিলেন। দোল দুর্গোৎসব ক’রে, ছোটো একটি অতিথিশালা রেখেও কারো কোনো অভাব অভিযোগের প্রশ্ন ওঠেনি। ষোলো সতেরো বিঘা জমি নিয়ে চকমিলানো দালান কোঠাও ছিলো, পাঁচ সাতজন কাজের লোকও ছিলো, নৌকোও ছিলো তিনখানা। এক খানা সনাতন মিত্রের আলাদা, এক খানা অন্য দুই ভাইয়ের, অন্য খানা হাটবাজার, রিজার্ভ ট্যাংক থেকে জল আনা, অন্যান্য টুকটাক কাজের জন্য ব্যবহৃত হ’তো। সেটা সরকারি, অর্থাৎ সকলের। মানে সনাতন মিত্রেরও। সনাতন মিত্রের ছেলে মেয়ের সংখ্যা সাত।

ছেলেরা বাবার বিত্তের উপরেই সুখে সচ্ছন্দে বাস করে, মেয়েরাও বিবাহযোগ্য হ’লো। বিয়েও হ’লো। ছেলেরাও গ্রামের স্কুলে কোনোরকমে এন্ট্রেন্সটা পশ করলো বা ফেল করলো, কারোই কুড়ি বছর পার হ’লে আর অবিবাহিত রইলো না। বছর বছর ছেলেপুলেও হ’তে লাগলো। সনাতন মিত্রের কারো প্রতিই কোনো স্নেহের প্রকাশ ছিলো না। ভিতরে ভিতরেও যে ফল্গুনদীর ধারা বইতো তাও না। নিজের সুখ সুবিধা স্বাচ্ছ্যন্দ সেটাই সকলের উপরে। পরিবারের প্রত্যেকের উপরই সর্বদা রুদ্রমূর্তি। ভয়ে সব তটস্থ। সকলকে নিগ্রহ করাই ছিলো তার কর্ম। এই কারণে পুত্রকন্যা পত্নী কেউই তাঁর প্রতি তেমন ভালোবাসা অনুভব করতো না।

যতোক্ষণে না তিনি বাহির বাটির বৈঠকখানায় গিয়ে বসতেন ততোক্ষণ কারো হাঁফ ছাড়বার উপায় নেই। বৈঠক খানায় গেলেন তো সব বাঁচলো। স্নান খাওয়ার আগে আর ফিরতেন না। সেই সময়টাই ঐ সংসারের যতোটুকু শান্তি। পৃথক অন্ন ভাইয়েদের সঙ্গেও অবশ্য কোনো ভাব ছিলো না। কিন্তু সব কর্তাদেরই নিয়ম সকালবেলাকার জলপানি সেরে বৈঠকখানায় গিয়ে বসা। প্রজারা আসতো নানারকমের বার্তা নিয়ে, বন্ধুবান্ধবরাও আসতো। নায়েব মশাই আসতেন সম্পত্তির লাভ লোকসানের খবর নিয়ে। সে সব সারতে সারতে বেলা বেড়ে যেতো। কিন্তু অন্য তিন ভায়ের সঙ্গে তার বিষয় আশয়ের কোনো সংশ্রব না থাকার দরুণ, একটি বড়ো বৈঠকখানাকে ভাগ ক’রে দু’খানা করা হয়েছিলো। অবশ্য ঠিক সেজন্য নয়, ভ্রাতা হ’লেও এই মানুষটির অকথ্য ভাষা, অকথ্য ক্রোধ, অকথ্য ব্যবহার, কোনোটাই অন্য ভ্রাতাদ্বয়ের পক্ষে সহনীয় বলে মনে হ’তো না।

সনাতন নিজে এক ছেলে হলেও তিনি নিজে সাতখানা তৈরী করেছেন। অবশ্য সাতখানার মধ্যে দু’জন মেয়ে। পুত্র পাঁচটি। পুত্র বধুরাও প্রত্যেক বছর দু’জনে পালা করে করে ঈশ্বরের আশীর্বাদে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই প্রায় শ্বশুরকে ধরে ফেলেছে।

প্রতিভা বসুর Parash Pathar pdf পরশপাথর pdf ডাউনলোড করুন এখান থেকে Parash Pathar pdf পরশপাথর pdf পড়ুন এখান থেকে

Be the first to comment

Leave a Reply