স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর Baboi pdf বাবুই pdf book ডাউনলোড করুন ও Baboi pdf বাবুই pdf পড়ুন।
Baboi pdf বাবুই pdf বাবুইয়ের কথা
আমি বাবুই। না মানুষ নই, পাখি। ওই যে ছােট্ট চড়াইয়ের মতাে দেখতে যে-পাখিটা সুন্দরমতাে বাসা বানায়, সেই গােত্রের পাখিই আমি। আপনারা ভাববেন না যে, আমি এখানে আমাদের প্রজাতির পক্ষ থেকে কিছু দাবি জানাতে বা প্রচার করতে এসেছি! আমি এসেছি আমার সামান্য জীবনের কথা বলতে। কলকাতাতেই থাকি আমি। হ্যাঁ, অবাক হওয়ার কিছু নেই, বাইপাসের দিকে যেতে কালিকাপুর বলে যেজায়গাটা আছে, সেখানে একটা বাড়ির বাগানে আমার বাসা। না, মানে ঠিক এখনও বাসা হয়নি। কিন্তু সেটা তৈরি করারই চেষ্টা করছি আমি। বর্ষা আসবে। তার আগেই আমায় বাসাটা বানিয়ে ফেলতে হবে। না হলে কুমুদিনী অন্য কাউকে নিয়ে সংসার পাতিয়ে ফেলবে।
মা, মা, মা এবং বাবা pdf – আরিফ আজাদ Ma Ma Ma Ebong Baba pdf – Arif azad
কুমুদিনী থাকে যাদবপুরের দিকে। ওই যে একটা বড় ইউনিভার্সিটি আছে না? তার ক্যাম্পাসের একটা নির্জন কোণের দিকে থাকে কুমুদিনী। তবে সকালের দিকে প্রায়ই এদিকে আসে ও। আসলে এমন বাগান আর পুকুরওলা এত বড় বাড়ি এই অঞ্চলে তাে আর নেই। তাই নানারকম পাখি এখানে আসে ঘােরাঘুরি করতে। এটা পাখিদের পার্ক বলতে পারেন। তা, কুমুদিনীও আসে। আর আসামাত্র ছুটকো, প্রদ্যুম্ন, বন্ডেল, সুহার্তো থেকে শুরু করে সবাই ওর পেছনে লেগে পড়ে। আমার দেখলে যা ইয়ে জ্বলে না! কিন্তু আমি কিছু করতে পারি না। মনখারাপ করে পশ্চিম দিকের ওই বড় একটা কাঁঠালচাপা গাছের ডালে বসে থাকি।
গাছটার নীচে মাঝে মাঝে একটা মেয়ে এসে বসে। ছােট করে চুল কাটা। ঠোঁটের ওপরে একটা তিল। আর কী দারুণ দেখতে! না না, কুমুদিনীর মতাে অত সুন্দর দেখতে নয়। তবে দারুণ দেখতে! কিন্তু মেয়েটা কেমন যেন গােমডামতাে। দুঃখী। রাগীও। সেদিন দেখছিলাম, একটা লােককে দেখে এমন করে তাকাল! ইদানীং লােকটাকেও আমি মাঝে মাঝে এই বাড়িতে আসতে দেখি। বাড়িটা আসলে বিশাল বড়। কমলালেবু রঙের। বহু পুরনাে। এই লােকটাকে আমি আগে দেখিনি। ইদানীং, মানে মাসখানেক হল দেখছি আসছে। আর এই লােকটাকে দেখেই সুন্দরমতাে মেয়েটা কী যে রাগী রাগী চোখে তাকায়!
বিমল কুমার সমগ্র ১ pdf – হেমেন্দ্রকুমার রায় Bimal Kumar Samagra 1 pdf – Hemendra Kumar Ray
হ্যাঁ, আমি রাগী রাগী চোখ চিনি। কারণ, ছুটকো, প্রদ্যুম্ন, বন্ডেল, সুহার্তোর সঙ্গে আড্ডা মারলেও দূর থেকে মাঝে মাঝে আমার দিকেও অমন রাগী রাগী চোখে তাকায় কুমুদিনী। কী যে করেছি আমি কিছুই বুঝি। শুধু অমন সাইলেন্ট চোখের ধমক খেয়ে মাথা নিচু করে গিয়ে আমি বসি সতুদার কাছে। সতুদা আমাদের সবার সিনিয়র। বাড়ি বানিয়ে বউ বাচ্চা নিয়ে জমাট সংসার সতুদার। লােকটা ভাল। আমায় ভালবাসে। সতুদা আমায় দেখে বলে, “এমন ক্যালানের মতাে মুখ করে আছিস কেন? যা বাসা বানা। বাসা বানালেই কুমুদিনী এসে জুটবে। জানিস না এটাই আমাদের নিয়ম? তােকে তাে নিজের ওয়র্থ প্রমাণ করতে হবে, না কি! মেয়েটা কোন ভরসায় তাের কাছে আসবে বল তাে? এমন দিলীপকুমারের মতাে মুখ করে বসে থাকলে কিছু হবে না।”
আমি জানি হবে না। কিন্তু কী আর বলি। সতুদার কথায় মাথা নিচু করে চুপ করে বসে থাকি। সতুদা আবার বলে, “তাের বাবা হরিচরণদা কী দারুণ বাসা বানাত! মাস্টার উইভার যাকে বলে। তার রক্ত আছে তাের শরীরে। তুইও পারবি। বানা বানা।” আমি তাই আজ থেকে বাসা বানানাের চেষ্টা করছি। কিন্তু ঠিক পারছি না। ওইসব পাঁচ আর বুনােট খুব সহজ নয় কিন্তু। রেল লাইনের পাশে বড় ঘাসের জঙ্গল আছে। সেখান থেকে লম্বা ঘাস নিয়ে আসছি আমি। তারপর সেগুলাে দিয়ে পুকুরের ওপর ঝুলে থাকা গাছের ডালে, পুব দিকে মুখ করে বাসা বানানাের চেষ্টা করছি। সত্যি বলছি, এখনও সুবিধে করতে পারছি না। বারবার গিট খুলে যাচ্ছে। প্যাচ ঠিক হচ্ছে না। ঘাসের সরু ফিতেগুলাে স্লিপ করে পড়ে যাচ্ছে মাটিতে। নাজেহাল হচ্ছি আমি।
আমার চেষ্টা দেখে ওই দুরের লিচু গাছের ডালে বসে হাসছে প্রদ্যুম্নরা। আওয়াজ দিচ্ছে। উড়ে উড়ে নিজেদের মধ্যে আনন্দ করছে। আর এসবের মাঝে বসে আমার দিকে রাগী রাগী চোখ করে তাকিয়ে আছে কুমুদিনী। বাসাটা ঠিকমতাে বানাতে না-পারলে কী যে হবে! প্রদ্যুম্নদের মধ্যেই কি কেউ কুমুদিনীর সঙ্গে সংসার পাতবে? ভাবলেই বুকের মধ্যে কেমন একটা আগুন লেগে যায় আমার। এত কষ্ট হয় যে, মনে হয় পাখি থেকে শামুক হয়ে গিয়ে নিজের মধ্যেই নিজে গুটিয়ে থাকি আজীবন। কুমুদিনী কি বােঝে না আমি চেষ্টা করছি? বােঝে না ওকে ছাড়া আমার এ জীবন শূন্য? কেন তবে সারাক্ষণ ওই মেয়েটার মতাে রাগী রাগী চোখ করে তাকায় আমার দিকে? আচ্ছা, কুমুদিনীরও কি ঠোঁটের ওপর অমন একটা অভিমানী তিল আছে?
Baboi pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.