অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই ভারতের টানাপোড়েনের জীবন্ত কাহিনী Dui Bharatbarsha pdf দুই ভারতবর্ষা pdf ডাউনলোড করুন।
Dui Bharatbarsha pdf দুই ভারতবর্ষা pdf নমুনাঃ
আকালকে জুতে আনতে পারছি না।
আকাল বড় ভোগাচ্ছে।
বছর দশেক ধরে আকাল মাথার ঘিলুতে বার বার কামড় বসাচ্ছে। আকাল, ময়না, ছোটবংশী, লাটুবাবু। লাটুবাবুর লাট, দাশু করের লাট—দুই তরফে আকাল আর ছোটবংশী দিন গুজরান করে। আর আছে একজন সাধুবাবা। মসজিদের ইঁদারা পার হয়ে খালপাড়ে তার ঝুপড়ি। মালা তাবিচ গলায়। লম্বা জোববা গায়ে। কাঁচাপাকা দাড়ি। শিরিঙে মানুষ। মাথার পাগড়িখানাও তালিমারা। গরীব গুরবো মানুষের ভরসা। হেকিমি দানরি যার যেমন দরকার—সে জল পড়ে দেয়, বলতে গেলে সে তাগা তাবিজের কারবারি।
হাউ টু টক টু এনিওয়ান pdf – লেইল লোনডেস How to talk to Anyone pdf by Leil Lowndes
আসলে আকাল জাতে গরীব। আকাল বদন কামাল ছোটবংশীর জাত আলাদা লোকলজ্জার মেহেরবানীতে। জাত নিয়ে বড়াই গরীবের সয় না। গরীবের মানায়ও না। জাত নিয়ে বজ্জাতি বড় হারাম তা তারা বোঝে। গরীবের জাত ধুয়ে কী যে হয়!
যাই হোক আকালকে নিয়ে এবং মল্লারপুরের বাসিন্দাদের নিয়ে নানা গল্পে এই জাত বেজাতের প্রশ্ন তুলে তার কোনও হিল্লে করতে পারিনি। ধানের জমি পড়েই থাকল, ফসল তোলা হল না। শুধু রাতে জাগালদারি সার।
রাতের ডঙ্কা বাজে। রাতচরা পাখিরা উড়ে যায়।
শুধু এক প্রশ্ন ধান কে খায়?
পোকামাকড়ে খায় না মনুষ্যে খায়?
যেমন একবার ছোটবংশী গল্পে হাজির—আঘুনের শীতে বড় কাবু ছোটবংশী। সকাল থেকে উত্তুরে হাওয়া দিচ্ছে। দু-দিন ঝড় বৃষ্টি গেছে। আকাশ মেঘলা। শীত না পড়তেই এই হাল।
বাপ্পী ভয়ংকর pdf – সুমন্ত আসলাম Bappi Voyongkor pdf by Sumanta Aslam
ছোটবংশী যাচ্ছে জাগালদারি করতে। নিশিথে হিম হয়ে থাকে মাঠ। সে একখানা খুট গায়ে দিয়ে কেঁথা গায়ে দিয়ে জমি পাহারা দেয়। ফসলের জমি। ধানের মাঠ আঘুন মাসে সোনালীবরন ধরে। জোছনা উঠলে সোনালী শুখখুরের যেন এক তাজ্জব করা পিঠ। জোছনা পিছলে যেতে সময় লাগে না। সুমার মাঠ ছোটবংশীর চোখে চলন্ত এক মহাকায় গুখখুরের পৃষ্ঠদেশ মনে হয়। গোটা মাঠটাই সচল হয়ে ওঠে। সোনালি সমুদ্র ভেসে ভেসে আকাশের হে-পাড়ে নিরন্তর অদৃশ্য। অন্তরালে তিনি এক দেবী হয়ে যান।
জোছনায় হিমের কুয়াশায় দেবীর আবির্ভাবও হয়। তিনি কোন কিসিমের দেবী সে জানে না। দেবী দিগম্বরী হয়ে কুয়াশায় ভেসে যেতে থাকলে তার বড় লজ্জা হয়। সে তখন চোখ বুজে থাকে । দেবীর লীলা খেলা বোঝা ভার।
মাঠের দেবী তিনি হতে পারেন, নাও পারেন। তবে সে ভাবে, তাঁর মর্জিতে সব হয়। পিচাশিতলা থেকে তিনি হয়ত নেমে এসেছেন।
তিনি অধরা। তাঁর পিছু ধাওয়া করতে নেই । পরি হুরি যিনিই হোন সে পাতায় ছাওয়া ডেরার মধ্যে কেঁথা গায়ে দিয়ে বসে থাকে। ঢেঁড়িকুপি জ্বলে ভিতরে। শীতে কাবু হলে বিড়ি ফোঁকে। আর মাঝে মাঝে ডংকা বাজায়। রাতচরা পাখিরা ডংকা বাজালে উড়ে যায়। পোকামাকড় ঝিম মেরে থাকে। ইঁদুর বাদুড় আতঙ্কে পালায়।
বংশী সবই জানে। দেবীর কথাও।
তবে সে পাঁচ কান করে না।
পাঁচ কান না করলে কি হবে!
দেবীর এই অলৌকিক ভ্রমণ জানাজানি হতে বাকি থাকে না। দেবীর আবির্ভাব হলেই ঘোর সঙ্কট বোঝে। তিনি মধ্য রাতে জোছনায় ঘুরে বেড়ান। জাগালদার হেমন্ত, বদন কামালও দেখেছে। রোজ দেখা যায় না। মধ্য রাতে জেগে বসে থাকা সার । কখন তাঁর আবির্ভাব হবে কেউ জানে না। দেবীর মর্জি। জোছনায় সারা মাঠ বড় নিঃসঙ্গ।
দূরে অদূরে জাগালদার বসে থাকে ঘাপটি মেরে।
চোর ছ্যাঁচোরের উপদ্রব, পোকামাকড়ের উপদ্রব ——কত উপদ্রব বাঁচিয়ে লাটে ফসল তুলতে হয়। যারা রাত জাগে তারাই শুধু জানে।
এই আকাল আর ছোটবংশীকে নিয়ে লেখকেরও মেলা হ্যাপা। আকাল কে?
গরীব মানুষ। বামুন কায়েত জেলে জোলা বলে কোনও কথা নেই। সে গরীব। তার বউ ময়না বছর বিয়োনি। খালের ধারে মাটির ঘর, খড় বিচুলিতে ছাওয়া। লাটুবাবুর আমবাগানের এক কোনায় একটা গরু সম্বল করে জুতমতো খেপলা জালে মাছ ধরে। ফাঁক বুঝে চুরিচামারিও করে।
এই দেবীকে নিয়েও লেখকের কম হ্যাপা নয়। তিনি দেবী, না ভূত প্রেত পিশাচ কিংবা তিনি কোন দেবী – যিনি মধ্যরাতে হেমন্তের মাঠে বিচরণ করেন! দেবী ভৈরবী না তিনি ধূমাবতী।
নানা রূপে তিনি চরাচরে ভজনা পান।
জোছনায় নিঃসঙ্গ মাঠে এমন কী মায়া সৃষ্টি হয় তিনি বুঝতে পারেন না। জাগালদার ছোটবংশীর কি দায় দেবী দেখার? বদন কিংবা কামালেরই বা আতঙ্ক কেন এত । না দেখলে পীরের থানে মোমবাতি জ্বালবে কেন।
Dui Bharatbarsha pdf দুই ভারতবর্ষা pdf ডাউনলোড link
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.